রফিকুল ইসলাম, রাজশাহী
রাজশাহীর একটি আড়তে আমে রাসায়নিক ছিটানো হচ্ছে।ফাইল ছবি
অঅ-অ+
রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জকে দেশের আমের রাজধানী বলা হয়। এই আমের রাজধানীতে রয়েছে নানা জাতের ও নামের আম। কোনোটা লাল টুকটুকে, আবার কোনোটা হলুদ বর্ণের। গোপালভোগ, রানীপ্রসাদ, মোহনভোগ, খিরসাপাত, ফজলি, লখনা, ল্যাংড়া, আম্রপালিসহ প্রতি জাতের আম হরেক স্বাদে ভরা। মোহনীয় স্বাদের এই আম কার না ভালো লাগে? কিন্তু দিন বদলে যাচ্ছে। সেই আম, বিশেষ করে বাজারে ওঠা আম ক্রমেই যেন আতঙ্কের নামে পরিণত হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর ছোবলে তিন-চার বছর ধরে চলছে ভেজালের কায়কারবার। গাছ থেকে নামানোর পর অপরিপক্ব আম পাকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্যালসিয়াম কার্বাইড নামের এক ধরনের বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য। আবার আম পচনরোধে মেশানো
হচ্ছে ফরমালিন। অন্যদিকে গাছে থাকা অবস্থায় পোকামাকড়ের হানা থেকে আম রক্ষায় ছিটানো হয় নানা ধরনের কীটনাশক। ফলে আমের রাজধানীতেই এখন ভেজালমুক্ত আম পাওয়া দায়। শুধু আম নয়, অনেক ফলই আমের পরিণতি বরণ করছে। লিচু, কলা, পেঁপে, বরই, স্ট্রবেরি, আনারস, টমেটোসহ দেশি অনেক ফলই ভেজাল আর দূষণমুক্ত পাওয়া দায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাসায়নিক দ্রব্য মেশানোর ফলে শরীরে ক্যান্সারসহ নানা রোগবালাইয়ের বাসা তৈরি করে। শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় সবচেয়ে বেশি।
আম : রাজশাহীর বানেশ্বর, নওহাটা, দুর্গাপুরসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে ব্যবসায়ী ও আমচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব বাজারে আম উঠতে শুরু করেছে অন্তত ২০ দিন আগে। প্রথমে লখনা আর আটি (গুঁটি) জাতীয় আম দিয়ে বাজার শুরু হয়। এরপর আসতে শুরু করে গোপালভোগ ও হিমসাগর জাতের আম। এরই মধ্যে রাজশাহীর অধিকাংশ বাগান থেকে লখনা ও গোপালভোগ বিদায় নিয়েছে। যদিও এখনই এ দুটি জাতের আমের প্রধান মৌসুম। কিন্তু তার আগেই উচ্চ মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা আম পরিপক্ব না হতেই সেগুলো বাজারজাত করেছে। আর সেই অপরিপক্ব আম পাকাতে ব্যবহার করা হয়েছে নিষিদ্ধ ক্যালসিয়াম কার্বাইড। এই আম পাঠানো হয়েছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে। কার্বাইড দেওয়ার ফলে কাঁচা ও অপরিপক্ব আমও সর্বোচ্চ ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই পেকে যায়। সেই সঙ্গে রঙে এসেছে আরো চাকচিক্য।
ব্যবসায়ী ও চাষিরা জানান, বাজারে এখন পরিপক্ব গোপালভোগ, মোহনভোগ ও খিরসাপাত (হিমসাগর) জাতসহ নানা জাতের আম নামছে। এর ফলে আম পাকানোর জন্য কার্বাইড ব্যবহারের পরিমাণ কমে গেছে। ফলে দ্রুত আম না পাকাতে ও পচনরোধে এখন মেশানো হচ্ছে ফরমালিন। এক সপ্তাহ ধরে রাজশাহীর বাজারগুলোতে নানা কায়দায় ফরমালিন মেশানো হচ্ছে আমে।
সূত্রমতে, ২০১১ সালের ২৬ মে রাজশাহীর রেঞ্জ ডিআইজিকে আমে রাসায়নিক মেশানোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। কিন্তু তার পরও থেমে নেই অবৈধ এ প্রক্রিয়ায় আম বাজারজাতকরণ।
জানতে চাইলে ডিআইজি মীর শহিদুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে জানান, 'আমে কার্বাইড মেশানোর বিরুদ্ধে কাজ করতে রাজশাহীর প্রতিটি জেলার পুলিশ সুপারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের জেলায় জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার কথাও বলা হয়েছে। এর পরও বিভিন্ন জায়গায় এ অবৈধ কাজ হচ্ছে বলে শুনেছি।'
রাজশাহীর বৃহত্তর আমবাজার বলে পরিচিত বানেশ্বর বাজারে গতকাল ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ গোপালভোগ আম বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকা, হিমসাগর দুই হাজার ৪০০ দুই হাজার ৮০০ টাকা, লখনা আম এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা ও আটি জাতের আম বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকা থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা মণ দরে। অথচ গত বছর এই সময় গোপালভোগের বাজার ছিল সর্বোচ্চ এক হাজার ৮০০ টাকা, হিমসাগর দুই হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা, লখনা এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা মণ। কিন্তু এবার শুরু থেকেই আমের বাজার গতবারের চেয়ে অনেকটা বেশি বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা অপরিপক্ব হলেও কার্বাইড দিয়ে বিপুল পরিমাণ আম বাজারজাত করছে। ফলে পরিপক্বতা আসার আগেই আটি, গোপালভোগ, লখনাসহ কয়েকটি জাতের আম ব্যাপক হারে বাজারজাত করায় এখন সেগুলো প্রায় শেষের দিকে।
রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে কিছুদিন ধরে চালানো অনুসন্ধানে আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, রাজশাহীর আমচাষিরা সাধারণত আমে কার্বাইড ব্যবহার করেন না। বাইরে থেকে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী বা আমের বাগান লিজ নেওয়া ব্যবসায়ীরাই আমে কার্বাইড মিশিয়ে বাজারজাত করে চলেছেন। তাঁরা গাছ থেকে আম নামানোর সঙ্গে সঙ্গেই ক্যালসিয়াম কার্বাইড স্প্রে করছেন অথবা আমের ঝুড়িতে কার্বাইডের প্যাকেট ঢুকিয়ে দিচ্ছেন। ফলে অপরিপক্ব আম হলেও মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পেকে উজ্জ্বল রং ধারণ করছে। এই রাসায়নিক প্রয়োগে আম সহজে পচে না।
বানেশ্বর বাজারের ব্যবসায়ী আসলাম আলী জানান, যেসব জাতের আম এখানো অপরিপক্ব, সেগুলো গাছ থেকে পাড়ার পরই ছিটানো হচ্ছে কার্বাইড। আবার যেগুলো পোক্ত হয়েছে, সেগুলোর পচনরোধে দেওয়া হচ্ছে ফরমালিন। সাধারণত রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা পাইকারি অধিকাংশ ব্যবসায়ী ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা শহরে আম বাজারজাত করতেই এগুলো করছেন।
দুর্গাপুরের আম ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন বলেন, 'স্থানীয় ব্যবসায়ী বা আমচাষিরা আমে ফরমালিন বা কার্বাইড মেশান না। বাইরে থেকে আসা ব্যবসায়ীরা বা বানেশ্বর বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ীরা এ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা কখনো নিজেদের লিজ নেওয়া বাগানে দিনের বেলা আম পাড়ার পর, আবার কখনো স্থানীয় আমচাষি বা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আম কিনে রাতের আঁধারে এগুলো করে বলে শুনেছি। না হলে এবার যে আমগুলো আগেভাগেই গাছ থেকে নামানো হয়েছে, তা পাকার কথা নয়।'
রাজশাহীর বানেশ্বর বাজারের দিলসাদ আলী, হোসেন আলী, জিয়াউদ্দিনসহ আরো অনেক ব্যবসায়ী জানান, প্রতি ৫০ কেজি আম পাকাতে অন্তত ৫০ গ্রাম তরল ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করা হয়। এর ফলে উৎপন্ন তাপ ও অ্যাসিটিলিন গ্যাসের প্রভাবে আম পেকে যায় দ্রুত। এ ছাড়া আম গাছে থাকা অবস্থায় হোপার পোকা, আম ছিদ্রকারী পোকাসহ নানা ধরনের পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে, এমনকি আমের ঔজ্জ্বল্য ঠিক রাখতেও রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়। সব মিলিয়ে আমের গুটি আসার পর থেকে নামানো পর্যন্ত কমপক্ষে চারবার স্প্রে করা হচ্ছে গাছে। তবে শেষবার আম পাকাতে যে কার্বাইড ও পচনরোধে যে ফরমালিন স্প্রে করা হচ্ছে, তার সঙ্গে কেবলই বাইরের আম ব্যবসায়ীরা জড়িত বলেও দাবি করেন ওই ব্যবসায়ীরা।
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটের রাজশাহী বিভাগীয় উপপরিচালক রেজাউল ইসলাম জানান, আমে ক্ষতিকারক রাসায়নিক মেশানো রোধে সপ্তাহে দুইবার বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে যখন অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে, তখন এ ধরনের কাজ কেউ করছে না। আবার অভিযান বন্ধ হলেই রাতের আঁধারে এগুলো করা হচ্ছে।
রেজাউল ইসলাম আরো জানান, কার্বাইড অ্যাসিটিলিন গ্যাস তৈরি করে। এ অ্যাসিটিলিন শিখা দিয়ে ঝালাইয়ের কাজ করা হয়। এটা মানবদেহে গেলে ক্যান্সারসহ নানা রোগ দেখা দিতে পারে। ফলে ব্যবহারকারী ও ভোক্তা- উভয়েই মারাত্মক ক্ষতির শিকার হতে পারে।
স্ট্রবেরি : স্ট্রবেরির রাজধানী বলে পরিচিত রাজশাহীতে গত শীত মৌসুমে প্রায় ৭০০ বিঘা জমিতে এ ফল চাষ হয়। তবে রসালো লাল টুকটুকে এ ফলটি যতটা না দেখতে সুন্দর এর চেয়েও ভয়ংকর এটি উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারজাত পর্যন্ত যে পরিমাণ কীটনাশক মেশানো হয়, সেটি। পাকা স্ট্রবেরি জমি থেকে সংগ্রহ করার পর এর স্থায়িত্বকাল থাকে সর্বোচ্চ ৩০ ঘণ্টা। কিন্তু ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে এটি সরবরাহ করতেই লেগে যায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েক দিন। ফলে এটি নির্বিঘ্নে বাজারজাত করতে প্রয়োগ করা হয় ফরমালিন। এ ছাড়া এটি চাষ করতেও প্রচুর পরিমাণে কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। ফলে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের জেলা শহরগুলোতে সরবরাহ করা পুরো স্ট্রবেরিটাই বিষে ভরা থাকে। স্ট্রবেরিচাষি মনির হোসেন বলেন, 'এই ফল চাষ করতে প্রচুর পরিমাণ কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। তা ছাড়া নরম জাতের এ ফলটি জমিতে পাকার আগেই নষ্ট হয়ে যেতে থাকে, ফরমালিন না মিশিয়ে উপায় থাকে না।'
কলা : রাজশাহীতে প্রচুর পরিমাণে কলা ও পেঁপেজাতীয় ফলেরও প্রচুর চাষ হয়। জেলার বানেশ্বর হাটেই প্রতিদিন অন্তত ৫০ লাখ টাকার কলা বেচাকেনা হয়। কলা চাষের জন্য জেলার পুঠিয়া, দুর্গাপুর, মোহনপুর, পবা, বাঘা ও চারঘাট বিখ্যাত। জমি থেকে কাঁচা কলা সংগ্রহ করে কৃষকরা ওই অবস্থায় তা বাজারজাত করেন। এরপর ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকারি ব্যবসায়ীরা গাড়িতে ওঠানোর আগে আড়তের ভেতরেই সেগুলোতে কার্বাইড স্প্রে করেন। এতে কাঁচা কলা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পেকে হলুদ বর্ণের হয়ে যায়।
বরই-পেয়ারা-পেঁপে-লিচুতেও রাসায়নিক : বরই, পেয়ারা, পেঁপে ও লিচু চাষেও ব্যবহৃত হচ্ছে ক্ষতিকারক কীটনাশক। এসব ফল সাধারণত গাছে থাকা অবস্থায় পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। তবে ইদানীং গাছ থেকে নামানোর পর পেঁপে পাকাতেও কার্বাইড ব্যবহার করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে লিচু লাল টকেটকে রং ও আকার বড় করার জন্য এক ধরনের হরমোন ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে পাঠানোর সময় কখনো কখনো ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। যদিও লিচুতে ফরমালিনের ব্যবহার বাড়েনি বলে দাবি করেছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা।
রাজশাহীর সিভিল সার্জন ড. আব্দুস সোবহান বলেন, 'হরমোন, কার্বাইড দিয়ে বিভিন্ন ফল পাকানো হলে সেগুলো মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। এগুলোর পরিমাণ অতিরিক্ত হলেই মানবদেহের জন্য ভয়ংকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে চোখের ক্ষতি হতে পারে, হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দিতে পারে, কিডনি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ক্যান্সারসহ মানুষের প্রজনন ক্ষমতাও নষ্ট হতে পারে। আবার গর্ভকালীন অবস্থায় হরমোন প্রয়োগ করা ফল খেলে পেটের সন্তানও নষ্ট হতে পারে।'
টমেটো : রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে প্রতি শীত মৌসুমে অন্তত আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন টমেটো চাষ করা হয়। এই টমেটো শীতকালে হয় বলে এগুলো পোক্ত হলেও সহজে পাকে না। ফলে টমেটো পাকাতে এক ধরনের রাসায়নিক হরমোন ব্যবহার করা হয়, যা মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বলে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত করেছেন। হরমোন দিয়ে পাকানো লাল টকটকে রঙের টমেটো প্যাকেটজাত করে পাঠানো হয় ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। ওই সময় প্রতিদিন গোদাগাড়ী থেকে শত শত টন টমেটো যায় বিভিন্ন স্থানে।
গোদাগাড়ীর রাজাবাড়ী এলাকার টমেটোচাষি মুনসুর রহমান বলেন, 'অতিরিক্ত শীতের কারণে টমেটো পাকতে দেরি হয়। কাজেই কাঁচা টমেটো জমি থেকে তুলে এনে সেগুলোতে হরমোন মিশিয়ে পাকাতে হয়। হরমোন না মেশালে টমেটো ১৫ দিনেও পাকে না।'
মধুপুরে আনারসে বিষ প্রয়োগ : টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, আনারসচাষিদের ভাষ্য, অগ্রহায়ণ, পৌষ ও মাঘ মাসে মূলত আনারসের চারা রোপণ করা হয়। চৈত্র, বৈশাখ মাসেও রোপণ করা যায়। গাছ বেড়ে পরিপক্ব হলে প্রথম কেমিক্যাল প্রয়োগ করা হয়। এতে আনারস তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসে। আনারস বের হওয়ার সময় লালচে রং থাকে। সে রং কেটে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ধাপে কেমিক্যাল দেওয়া হয়। এতে ফল (আনারস) আকারে বড় হয়। ২০ থেকে ৩০ দিন পর তৃতীয় ধাপে পরপর দুই অথবা তিনবার কেমিক্যাল দেওয়া হয়। আনারস বড় হওয়ার জন্যই এই ধাপেও কেমিক্যাল দেওয়া হয়। ফলে রস এসেছে বোঝা গেলে শেষ ধাপের জন্য প্রয়োগ করা হয় কেমিক্যাল। এবার দেওয়া হয় আনারসকে দ্রুত পাকানোর জন্য। এই ধাপের কেমিক্যালে আনারসের রং হলুদ হয়ে আকর্ষণীয় দেখায়।
'পাকানোর জন্য কেমিক্যাল দেওয়ার ১০ দিনের মধ্যেই সব আনারস একবারে পেকে যায়। তখন একসঙ্গে সব আনারস বাজারে নেওয়া যায়। কেমিক্যাল না দিলে আস্তে আস্তে পাকবে। বাজার ধরতে অসুবিধা হবে।'
চাষিরা জানান, আনারস বড় করার জন্য প্লানোফিক্স, সুপারফিক্স, ক্রপসকেয়ার, অঙ্কুরসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল প্রয়োগ করা হয়। আর পাকানোর জন্য দেওয়া হয় রাইবেন, হারবেস্ট, প্রমোট, সারাগোল্ড, ইটিপ্লাস, অ্যালপেনসহ বিভিন্ন কেমিক্যাল।
0 comments:
Post a Comment