সত্য জানি, সত্য মানি এবং সত্যের সাথে থাকি। সকল খবর হোক সত্য ও নিরপেক্ষ।

সত্যকে অস্বীকার কারনে, গত চার দশকে জাতি হিসাবে আমরা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারিনি । স্বাধীনতার প্রায় অধ শতাব্দীতে জাতি তার কাঙ্তিত সাফল্য পায়নি।

মোর নাম এই বলে ক্ষ্যাত হোক – আমি তোমাদেরই লোক

যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ জাতি সমৃদ্ধিলাভ করেছে - আমরা তাদের ভুলব না । তোমরা অমর হয়ে থাকবে জাতীর ভাগ্যাকাশে। আমাদের ভালবাসা ও দোয়া রইল।

IT BD SOFT. একটি বিশ্বস্থ আইটি ট্রেনিং সেন্টার

------Pls visit http://itbdsoft.tk ------- কম্পিউটার শিক্ষা প্রসার ও বিকাশে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষা হোক সবার জন্য উম্মুক্ত ও সহজলভ্য।

পযটন হোক – জাতীয় উন্নতির একমাত্র হাতিয়ার।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া। কক্সবাজার, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, নীলগিরি সহ হাজারো দৃষ্টি নন্দন অপার সৌন্দার্য ছড়িয়ে আছে এ জমিনে – জানি ও সমৃদ্ধ করি দেশমাতৃকাকে।

IT BD SOFT. একটি বিশ্বস্থ আইটি ট্রেনিং সেন্টার

------Pls visit http://itbdsoft.tk ------- কম্পিউটার শিক্ষা প্রসার ও বিকাশে / এছাড়াও আমরা ডোমিন- হোষ্টিং বিক্রি /আপনার সাইটের ভিজিটর বাড়ানো / সাইটিকে কে গুগল টপে আনতে আমাদের সাহায্য নিন।

Monday, March 30, 2015

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী

হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী


গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী (জন্ম : ৮ সেপ্টেম্বর ১৮৯২ এবং মৃত্যু : ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৩) জনগণের প্রতি অসীম ভালোবাসা এবং গণতন্ত্রের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাই ছিল তার জীবনের প্রধান বৈশিষ্ট্য। দেশ ভাগের আগে ভারত ও পাকিস্তানের পাশাপাশি অখণ্ড স্বাধীন বাংলা নামে একটি ‘ডমিনিয়ন রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করার পর যোগ দেন সেইন্ট জ্যাভিয়ার্স কলেজে। সেখান থেকে বিজ্ঞান বিষয়ে তিনি স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক অর্জন করেন। এ ছাড়া সেখানে তিনি আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং বিসিএল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর ১৯২১ সালে কলকাতায় ফিরে এসে আইন পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শহীদ সোহরাওয়ার্দীর পথ অনুসরণ করে রাজনীতিতে পদচারণ করেন। শহীদ সোহরাওয়ার্দী বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী ছিলেন। প্রথমে তিনি যোগ দেন চিত্তরঞ্জন দাসের স্বরাজ পার্টিতে। ওই দলটি তখন মূলত ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের অভ্যন্তরে একটি গ্রুপ ছিল। ১৯২৩-এর বেঙ্গল প্যাক্ট স্বাক্ষরে তার যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। ১৯২৪ সালে তিনি কলকাতা পৌরসভার ডেপুটি মেয়র নির্বাচিত হন। ১৯২৮ সালে সর্বভারতীয় খেলাফত সম্মেলন এবং সর্বভারতীয় মুসলিম সম্মেলন অনুষ্ঠানে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। মুসলমানদের মধ্যে তার ব্যাপক রাজনৈতিক প্রভাব থাকলেও ১৯৩৬ সাল পর্যন্ত মুসলিম লীগের সঙ্গে তিনি জড়িত হননি। ১৯৩৬ সালের শুরুর দিকে তিনি ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট মুসলিম পার্টি’ নামক দল গঠন করেন। ১৯৩৬ সালের শেষের দিকে এই দলটি বাংলা প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সঙ্গে একীভূত হয়। এই সুবাদে তিনি বেঙ্গল প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হন। ১৯৪৩ সালে খাজা নাজিমুদ্দিনের মন্ত্রিসভায় তিনি শ্রমমন্ত্রী, পৌর সরবরাহ মন্ত্রী ইত্যাদি দায়িত্ব পালন করেন। ওই বছরই দেখা দেয় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে উল্লেখ আছে, “এই সময় শহীদ সাহেব লঙ্গরখানা খোলার হুকুম দিলেন। আমি লেখাপড়া ছেড়ে দুর্ভিক্ষপীড়িতদের সেবায় ঝাঁপিয়ে পড়লাম। তিনি রাতারাতি বিরাট সিভিল সাপ্লাই ডিপার্টমেন্ট গড়ে তোললেন। ‘কন্ট্রোল’ দোকান খোলার বন্দোবস্ত করলেন। গ্রামে গ্রামে লঙ্গরখানা করার হুকুম দিলেন। দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে ভয়াবহ অবস্থার কথা জানালেন এবং সাহায্য দিতে বললেন।”

১৯৪৬ সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তান আন্দোলনের প্রতি তার সমর্থন এবং সহযোগিতা প্রদান করেন। পরবর্তীতে খাজা নাজিমুদ্দিন পূর্ববাংলার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বেশ কয়েকবার সোহরাওয়ার্দীকে ‘ভারতীয় এজেন্ট’ এবং ‘পাকিস্তানের শত্রু’ হিসেবে অভিহিত করেন। সোহরাওয়ার্দীকে পাকিস্তানের আইনসভার সদস্য পদ থেকে অপসারণ করা হয়। তার অনুসারীরা অনেকে ১৯৪৮-এর শুরুর দিকে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগ এবং ১৯৪৯-এর জুনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বাধীন তৎকালীন বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের একাংশের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন ঢাকার রোজ গার্ডেনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের সভাপতি হন আবদুল হামিদ খান ভাসানী, টাঙ্গাইলের শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং শেখ মুজিবুর রহমানকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। অন্যদিকে, পুরো পাকিস্তানের ক্ষেত্রে সংগঠনটির নাম রাখা হয় নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এর সভাপতি হন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ২৪ বছরের পাকিস্তান শাসনামলে আওয়ামী লীগ আতাউর রহমান খানের নেতৃত্বে দুবছর প্রদেশে ক্ষমতাসীন ছিল এবং হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে কেন্দ্রে ১৩ মাস কোয়ালিশন সরকারের অংশীদার ছিল। ১৯৫৩ সালে তিনি এ কে ফজলুল হক এবং মওলানা ভাসানীর সঙ্গে একত্রে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। ১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর কৃষক শ্রমিক পার্টি, পাকিস্তান গণতন্ত্রী দল ও পাকিস্তান খেলাফত পার্টির সঙ্গে মিলে যুক্তফ্রন্ট গঠন করেন। এই যুক্তফ্রন্টের নেতা ছিলেন : ১. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ২. মওলানা ভাসানী ও ৩. এ কে ফজলুল হক। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মওলানা ভাসানী, আবুল কাশেম ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কর্তৃক গঠিত যুক্তফ্রন্ট অভূতপূর্ব জয়লাভ করে। ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ সম্পূর্ণভাবে পরাজিত হয়। তারা শুধু ৯টি আসন লাভ করে। ধর্মনিরপেক্ষতার চর্চা এবং অসা¤প্রদায়িক চেতনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগঠনটির নাম থেকে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দেয়া হয়। ১৯৫৫ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগ ‘মুসলিম’ শব্দটি বর্জন করে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এরপর মোহাম্মদ আলী বগুড়ার মন্ত্রিসভায় সোহরাওয়ার্দী আইনমন্ত্রী নিযুক্ত হন। তিনি ১৯৫৪ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে ১৯৫৫ সালের আগস্ট পর্যন্ত এ পদে ছিলেন। ১৯৫৫ সালের ১১ আগস্ট থেকে ১৯৫৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি পাকিস্তান আইনসভায় বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তানের প্রথম সংবিধান প্রণয়নে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৬ সালে পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য সংখ্যা ছিল ৮০। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ দলীয় সদস্য ছিলেন মাত্র ১৪ জন। রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে তদানীন্তন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইস্কান্দার মির্জা এই ১৪ জন পার্লামেন্ট মেম্বারের সমর্থনপুষ্ট সোহরাওয়ার্দীকে সে সময়কার পরিস্থিতির কারণে ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ করিয়েছিলেন। ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৫৭ সালের ১১ অক্টোবর পর্যন্ত তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যকার অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীকরণে তিনি পদক্ষেপ নেন। কিন্তু তার এই পদক্ষেপ ব্যাপক রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্ম দেয়। পূর্ব পাকিস্তানের মতো পশ্চিম পাকিস্তানেও এক ইউনিট ধারণা প্রচলনের তার চেষ্টা পশ্চিম পাকিস্তানি রাজনীতিবিদদের কারণে নস্যাৎ হয়ে যায়।


এরপর ১৯৫৮ সালে ইস্কান্দার মীর্জা পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করেন। ১৯৫৯ সালের আগস্ট থেকে ইলেক্টিভ বডি ডিসকুয়ালিফিকেশান অর্ডার অনুসারে তাকে পাকিস্তানের রাজনীতিতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। পাকিস্তান নিরাপত্তা আইনে রাষ্ট্রবিরোধী কাজের অপরাধ দেখিয়ে তাকে ১৯৬২ সালের ৩০ জানুয়ারি তাকে গ্রেপ্তার এবং করাচি সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ করা হয়। ১৯৫৮ সালের ৭ অক্টোবর পাকিস্তানে প্রথম সামরিক শাসন জারি হলেও ১৯৬২ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়নি। কিন্তু সোহরাওয়ার্দীর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ১৯৬২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার জগন্নাথ কলেজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয়। পরদিন বাংলাদেশের অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘট ও মিটিং-মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬২ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনজুর কাদির পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা মন্ত্রীকে আক্রমণ ও তার গাড়ি ভাঙচুর করেন। তুমুল আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে আইয়ুব খানের সামরিক আইন সারা দেশে অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ১৯৬২ সালের ৮ জুন সামরিক আইন প্রত্যাহার করা হয়। ৬ মাস ২০ দিন কারাজীবনের অবসান ঘটিয়ে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ১৯৬২ সালের ১৯ আগস্ট মুক্তিলাভ করেন। মুক্তিলাভের পরই সোহরাওয়ার্দী দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য তদানীন্তন নয়জন নেতাসহ দেশব্যাপী ঝটিকা সফর শুরু করেন। এ পর্যায়ে ১৯৬২ সালের শেষ ভাগে চট্টগ্রামের লালদীঘি ময়দানে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় ভাষণ দেন। ওই বছরের অক্টোবরে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের উদ্দেশে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এনডিএফ) গঠন করেন।

শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হক

শের-এ-বাংলা এ কে ফজলুল হক


শের-এ-বাংলা একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাঙালি কুটনীতিক হিসেবে বেশ পরিচিত ছিলেন। রাজনৈতিক মহল এবং সাধারণ মানুষের নিকট ‘শের-এ-বাংলা’ এবং ‘হক সাহেব’ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের গণমানুষের অবিসংবাদিত মহানায়ক জাতীয় নেতা বাংলার বাঘ খ্যাত আবুল কাশেম ফজলুল হক ১৮৭৩ সালের ২৬ অক্টোবর তৎকালীন বাকেরগঞ্জ মহকুমার বর্তমানে ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর থানার সাতুরিয়া গ্রামে তার নানার ভিটা সাতুরিয়ার মিয়া বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। শের-এ-বাংলা নামেই তিনি বহুল পরিচিত। তিনি রাজনৈতিক অনেক পদে অধিষ্ঠান করেছেন কলকাতার মেয়র (১৯৩৫), অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী (১৯৩৭-১৯৪৩), পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী (১৯৫৪), পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী (১৯৫৫), পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর (১৯৫৬-৫৮) পদ অলঙ্কৃত করেন তিনি। যুক্তফ্রন্টের অন্যতম প্রধান নেতা ছিলেন তিনি।
কাজী মৌলভী ওয়াজেদ আলী এবং সাইদুন্নেসা খাতুন ছিলেন তার বাবা-মা। শের-এ-বাংলার প্রাথমিক পড়াশোনা বাড়িতেই। গৃহশিক্ষকদের কাছে আরবি, ফার্সি, বাংলায় শিক্ষালাভ করেন। ১৮৮১ সালে বরিশাল জিলা স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৮৯ সালে বরিশাল জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা (এন্ট্রান্স) পরীক্ষায় ঢাকা বিভাগে মুসলমানদের মধ্যে প্রথম স্থান দখল করেন। ১৮৯১ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে এফএ পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং স্কলারশীপ লাভ করেন। ১৮৯৩ সালে তিনটি বিষয়ে অনার্সসহ প্রথম শ্রেণীতে বিএ পাস করেন। ১৮৯৫ সালে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় এম.এ ভর্তি হয়ে ১৮৯৬ সালে ইংরেজী ও অংক বিষয়ে এমএ পাশ করেন। ১৮৯৭ সালে ডিষ্টিংশনসহ বি.এল পাস করে মনীষী স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের অধীনে কলকাতা হাইকোর্টে যোগদান করেন। একই বছর একাডেমিক শিক্ষার সমাপ্তি টেনে তিনি কর্মজীবনে পদার্পণ করেন। শিক্ষনবীশ আইনজীবী হিসাবে কিছুকাল অতিবাহিত করে ১৯০০ সালে তিনি এককভাবে কাজ শুরু করে একবছরের মধ্যে অর্থাৎ ১৯০১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তার পিতা বিশিষ্ট আইনজীবী মৌলভী কাজী ওয়াজেদ আলী মারা যান। পিতৃবিয়োগের পরে তিনি কলকাতা ছেড়ে ফিরে এলেন তার নিবাস বরিশালে। এখানে এসে তিনি নতুন ভাবে আইন ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন।
শিক্ষাজীবন শেষ করে তিনি ১৮৯৬ সালে  নবাব আবদুল লতিফ সিআইই’র পৌত্রী খুরশিদ তালাত বেগকে বিয়ে করেন। সেখানে তার দুই কন্যা সন্তান জন্ম লাভ করলে তার স্ত্রীর অকাল মুত্যু হয়। খুরশিদের মৃত্যুর পর হুগলি জেলার অধিবাসি ও কলকাতায় বসবাসকারী জনাব ইবনে আহমদের মেয়ে জনাবা জিন্নাতুন্নেসা বেগমকে বিয়ে করেন। নিঃসন্তান জিন্নাতুন্নেসা মারা গেলে অবশেষে ১৯৪২ সালে ভারতের মিরাটের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের বিদুষী মেয়ে খাদিজা খাতুনকে বিয়ে করেন। ১৯৪৪ সালে খাদিজার গর্ভে একমাত্র পুত্র সন্তান এ.কে ফাইজুল হকের জন্ম হয়।
১৯১৩ সালে শের-এ-বাংলা বঙ্গীয় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯১৪ সালে তিনি নিখিল ভারত কংগ্রেস দলে যোগ দেন। খেলাফত আন্দোলনেও তিনি অংশ নেন। জমিদার মহাজনদের অত্যাচার-নির্যাতন থেকে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দরিদ্র কৃষকদের বাঁচানোর জন্য প্রতিষ্ঠা করেন তার বিখ্যাত ঋণ সালিশি বোর্ড। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি ইন্তেকাল করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন তিন নেতার মাজারে তিনি সমাহিত।
তিনি ছিলেন আপোষহীন সংগ্রামের প্রতীক সর্বপ্রকার সামাজিক অবিচার, অসম্মান ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন এক বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর। তাঁর কর্মময় জীবন ছিল বিংশ শতকের বাংলা ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে এক গৌরবময় অধ্যায়। তাই তাকে আপোষহীন সংগ্রামের প্রতীক বলা হয়। ঢাকা হাইকোর্টের জজ রাধিকারঞ্জন গুহ একে ফজলুল হক সম্বন্ধে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেছিলেন, ফজলুল হক আমেরিকায় জন্ম নিলে হতেন ওয়াশিংটন, বিলাতে জন্ম নিলে হতেন ডিজহেরলি, রাশিয়ার জন্ম নিলে হতে লেলিন, জার্মানিতে জন্ম নিলে হতেন হিটলার এবং ফ্রান্সে জন্ম নিলে হতেন রুশো অথবা নেপোলিয়ন।
১৯৩৭ সনে ১৫ অক্টোবর লখনৌ শহরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। মহাকালের এই মহান নেতা এ অনুষ্ঠানে বাংলার প্রধানমন্ত্রী এ.কে ফজলুল হক উর্দু ভাষায় জ্বালাময়ী বক্তৃতা দিয়ে লখনৌবাসীর হৃদয় জয় করেন। তারা ফজলুল হকের অনলবর্ষী ও বীরত্বব্যঞ্জক বক্তৃতায় আকৃষ্ট হয়ে স্বত:স্ফূর্তভাবে তাকে শেরে-এ-বাংলা উপাধি দেন। সেদিন থেকেই তিনি শেরে বাংলা নামে অভিহিত হন।
শেরে বাংলা এ.কে ফজলুল হক বাংলার কিংবদন্তীর নায়ক। তিনি ছাত্র শিক্ষকের নায়ক। তিনি রাজনীতিবিদদের নায়ক। তিনি আমলাদের কাছে একজন দক্ষ শাসক। তিনি কবি, সাহিত্যিকদের পৃষ্ঠপোষক। সংগ্রামী জনতার কাছে একজন বীরশ্রেষ্ঠ বাঙালি। তিনি সর্বস্তরের মানুষের অন্তর জয় করেছিলেন। তার খ্যাতির মূলে ছিল তার নির্মোহ সৃষ্টিশীল নেতৃত্ব।
শের-এ-বাংলার কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক
১৯২৩ সালে শের-এ- বাংলার মাত্র ৩৩ বছর বয়সে পেশা জীবনের পরিবর্তন আসে। তিনি ওকালতি ও অধ্যাপনা ছেড়ে দিয়ে তৎকালীন সরকারের ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে যোগদান করেন। ১৯১১ সালে সরকার তাকে সমবায় বিভাগের নিবন্ধকের দায়িত্ব দেন। একই সময় তিনি বরিশাল বি.এম কলেজে ইংরেজীর অধ্যাপক এবং বরিশাল জেলা স্কুলে ফার্সি ভাষায় পরীক্ষকের কাজও করতেন। ১৯০২ সালে“ভারত সুহৃদ” নামের সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদকও ছিলেন শের-এ- বাংলা।
রাজনীতিতে পদার্পণ
ভারত সুহৃদ পত্রিকা প্রকাশের মধ্যে দিয়েই শের-এ-বাংলা রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ও দেশকাল সম্পর্কে অনেক সচেতন হয়ে পড়েন। তিনি ১৯০২ সালে বরিশাল পৌরসভা নির্বাচনে দাঁড়ালেন এবং বিপুল ভোটে জয়ী হলেন। পৌরসভা নির্বাচনের পরে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করলেন জেলা বোর্ড নির্বাচনে সেখানেও তিনি বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন। ১৯০৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ঐতিহাসিক সর্বভারতীয় মুসলিম সম্মেলনের উদ্যোক্তা নবাব স্যার সলিমুল্লাহ সম্মেলন বাস্তবায়নে সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতে জনাব এ.কে ফজলুল হককে দায়িত্ব অর্পণ করেন। এর পরে ১৯০৬ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত “নিখিল ভারত শিক্ষা সম্মেলন”এর পক্ষে গোটা ভারতের মুসলমানদের একত্রিত করতে মূখ্য ভুমিকা পালন করেন তিনি। এর পরে ১৯১৩ সালে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এ.কে ফজলুল হক। ১৯১৬ সালে তিনি বঙ্গীয় প্রদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯১৮ সালে শের-এ- বাংলা ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জেনারেল সেক্রেটারী নির্বাচিত হন। তখন একই ব্যক্তি ইচ্ছা করলে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সদস্যপদ নিতে পারতেন তিনি তাই করেছিলেন।
বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার নির্বাচন
বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক পদের বিপরীতে ঢাকা বিভাগীয় একটি কেন্দ্র হতে ১৯১৩ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এ.কে ফজলুল হক। তার সাথে অপর প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন প্রভাবশালী হিন্দু জমিদার রায় বাহাদুর মাহেন্দ্রনাথ মিত্র। এই নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে প্রমাণ করলেন যে তিনি মুসলমান হিন্দু নির্বিশেষে সকলের প্রিয় নেতা।
আইন পরিষদের প্রথম ভাষণ
১৯১৩ সালে নির্বাচিত হয়ে নতুন সদস্য হিসাবে তিনি আইন পরিষদে তথ্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেন। প্রথম দিনেই তিনি জ্বালাময়ী বক্তব্য উপস্থাপন করে সকলকে মুগ্ধ করেন। আইন পরিষদে উপস্থিত বাংলার লাট কারমাইকেল শের-এ- বাংলার বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে আর আসন ছেড়ে তার সাথে করমর্দন করেন করে অভিনন্দিত করেন এবং এবছরই তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সদস্যপদ লাভ করেন।
অত্যাচারী মহাজন ও জমিদারদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম
১৯১৪ সালে শের-এ- বাংলা দেশের অত্যাচারী মহাজন ও জমিদারদের বিরুদ্ধে শুরু করেন তার রাজনৈতিক আন্দোলন। তারই প্রেক্ষিতে জামালপুরে অনুষ্ঠিত হয় কৃষকপ্রজা সাধারণ সম্মেলন। এই সম্মেলনে শের-এ- বাংলার উদাত্ত আহবানে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে দেশের সাধারণ প্রজাদের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। যার ফলে অল্পদিনের মধ্যেই এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে। যার প্রেক্ষিতে ১৯১৫ সালে শের-এ- বাংলার নেতেৃত্বে গঠিত হয় নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি। পরবর্তীতে এই সংগঠন দেশের জমিদার, জোতদার ও মহাজনদের বিরুদ্ধে সৃষ্ট আন্দোলন পরিচালনা করে।
শিক্ষা বিস্তারে শের-এ- বাংলা
শেরে বাংলা ১৯১৩ সনের আইনসভায় প্রবেশ করেই মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা বিস্তারের জন্য বিশেষ জোর দেন। তিনি উপলব্ধি করেন যে মুসলিম সমাজ যদি পাশ্চাত্য শিক্ষা গ্রহণ না করে তবে সম্প্রদায় হিসেবে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। কারমাইকেল হোস্টেল, টেইলার হোস্টেল, কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ, লেডি ব্রাবোর্ন কলেজ, তেজগাঁও কৃষি কলেজ, ফজলুল হক হল, চাখার ফজলুল হক কলেজ, আদিনা ফজলুল হক কলেজ, হরগঙ্গা কলেজ, ঢাকা সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ, সেন্ট্রাল ল কলেজ প্রভৃতি ফজলুল হকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় ছিল তার সক্রিয় সহযোগিতা। তার সময় দু হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শত শত মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।
শিক্ষা আন্দোলনের যে কোন কার্যক্রমের প্রতি তার ছিল অকুন্ঠ সমর্থন। তার চেষ্টাতেই ১৯১৬ সালে কলকাতায় প্রতিষ্ঠিত হয় দুটি ছাত্রাবাস যেমন টেইলর হোষ্টেল ও কারম্ইাকেল হোষ্টেল যা কিনা সেসময়ের যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত ছিল। এছাড়া ১৯২০সালের ১৩ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত শিক্ষা বয়কট নীতির এক সম্মেলনে তিনি উপস্থিত থেকে এ নীতির বিরোধীতা করেন। ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও কোলকাতা আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এর অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন শের-এ- বাংলা একে ফজলুল হক। তিনি আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ের “ফাউন্ডেশন মেম্বর অবধি ফাষ্ট কোর্ট” ছিলেন।
তার শিক্ষানীতি দ্বারা মুসলিম, হিন্দু, নবশূদ্ররাও উপকৃত হয়েছে। তার প্রতিষ্ঠিত অধিকাংশ শিক্ষায়তনে হিন্দু ছাত্র ও শিক্ষকগণের সংখ্যাই বেশী ছিল। আজকের উভয় বাংলার শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি তার শিক্ষানীতির ধারাবাহিকতার ফসল। তিনি গণশিক্ষা বিস্তারের জন্য আমরণ সংগ্রাম করেছেন।
তখন স্কুল সমূহে হিন্দুদের প্রভাব ছিল বেশি। মুসলমান ছাত্রদের সংস্কৃত পড়তে হত। সরকারি স্কুল ছাড়া অন্য স্কুলে আরবি ফার্সি পড়ানো হত না। তাই ফজলুল হক মন্ত্রী হয়ে আদেশ জারী করেন যে, কোনো স্কুলে সরকারি সাহায্য পেতে হলে ১ জন মুসলমান শিক্ষক ও ১জন মৌলভী নিয়োগ করতে হবে। তিনি স্কুল, কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজে মুসলমান ছাত্রদের আসন নির্দিষ্ট করে দেন। তারা ভর্তি না হলেও সীট খালি থাকবে। এ ব্যবস্থার ফলে কলেজে মুসলমানরা শিক্ষা ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে পেয়েছিল।
সমাজ সংস্কারক শের-এ- বাংলা
রাজনীতি, অর্থনীতি, সমাজ-সাহিত্য, সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে নবযুগের সূচনা হয়। শান্তি, শৃংখলা অক্ষুন্ন থাকে। দেশে ন্যায় বিচার, সত্য বলার জন্য সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা দেয়া হয়। এ সকল কারণে এ.কে ফজলুল হকের প্রধানমন্ত্রীত্বের কালকে ইতিহাসের স্বর্ণযুগ বলে আখ্যায়িত করা হয়।
কৃষক প্রজা সমিতির নির্বাচনে পটুয়াখালীতে ফজলুল হকের বিজয় বাংলার ইতিহাসের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। এ ভোট যুদ্ধের ফলে বাংলায় কৃষকরাজ প্রতিষ্ঠিত হয়। এ বিজয়ের ফলে তিনি বাংলার প্রধানমন্ত্রী হন। এ বিজয়ই তাকে মুকুটহীন সম্রাটের মর্যাদা দিয়েছিল।
কৃষকদের জন্য এ.কে ফজলুল হক সরকারি ঋণের ব্যবস্থা করেন। তিনি কৃষকদের জন্য ঋণ, ত্রাণ ও টেস্ট রিলিফের ব্যবস্থা করেন। তিনি কৃষকদের মধ্যে উন্নত বীজ সরবরাহ করে শস্যের গুণগত মান উন্নয়ন ও চাষীদের ন্যায্য মূল্য প্রদানের নিশ্চয়তা প্রদান করেন এবং এ উদ্দেশ্যে ১৯৩৮ সনে পাট অধ্যাদেশ জারি করেন।
পাল, সেন, সুলতানি ও মোঘল আমলে জমির মালিক ছিল স¤্রাটরা। কৃষকরা ছিল ভূমিদাস। তাদের সামাজিক মর্যাদা ছিল না। ইংরেজদের আমলে জমির মালিক ছিল জমিদাররা। হাজার বছরের সামন্তÍ প্রথাকে ধ্বংস করে ফজলুল হকের অবিরাম সংগ্রামের ফলে কৃষক জমির মালিক হল। কৃষকের সমস্যা ছিল সময়মত ঋণ পাওয়া। তিনি শত শত সমবায় সমিতি সৃষ্টি করে কৃষি ঋণের ব্যবস্থা করেন। তিনি খাজনার দায়ে জমি বিক্রি, সার্টিফিকেট প্রথা প্রভৃতি রহিত করেন। যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভার আমলে তিনি কৃষি ঋণ মওকুফ করেন। তার সময় অনেক ক্ষুদ্র ও ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে।
এ.কে ফজলুল হক বাংলার লক্ষ লক্ষ কৃষক পরিবারকে ঋণমুক্ত করার জন্য ১৯৪০ সনে মহাজনী আইন পাস করেন। এই আইনে সুদের উচ্চহার নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়। চক্রবৃদ্ধি সুদ বন্ধ করা হয়। সাধারণ সুদের হার ও বন্ধক রেখে সুদ করলে সুদের হার শতকরা ৮% এবং বিনা বন্ধকে ঋণ গ্রহণ করলে সুদের হার বেশি হতে পারবেনা।
এ.কে ফজলুল হক কৃষি ক্ষেত্রে নতুন চিন্তার উন্মেষ ঘটান। তিনি কৃষিশিক্ষা, প্রদর্শনী খামার, প্রচার, বাজার ঋণ প্রদান, গবেষণা, বিকল্প কর্মসংস্থান প্রভৃতি কর্মসূচি গ্রহণ করেন। আধুনিক কৃষি বিস্তারের লক্ষ্যে ফজলুল হকের মন্ত্রীসভা ঢাকা, রাজশাহী ও খুলনার দৌলতপুরে কৃষি ইনস্টিটিউট ও ঢাকায় ডেইরি ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৮ সনের ১৬ ডিসেম্বর ফজলুল হক ঢাকার তেজগাঁও কৃষি ইন্সটিটিউটের ভিত্তি স্থাপন করেন। ফার্মগেট থেকে শুরু করে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পর্যন্ত ডেইরী ফার্ম ও কৃষি ইন্সটিটিউট বিস্তৃৃত ছিল। পশু সম্পদ বৃদ্ধির জন্য তিনি উন্নত জাতের গবাদি পশু আমদানী এবং পশুপালন উন্নয়নের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেন। গবাদি পশু পালন ও দুগ্ধ সরবরাহ বাড়ানোর জন্য কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
এ.কে ফজলুল হক তার শাসনামলে নারী ও শিশুর মানবাধিকার সংরক্ষণ ও নির্যাতন প্রতিরোধের লক্ষ্যে আইন প্রণয়ন করেন। নারী কর্মচারী ও শ্রমিকদের কল্যাণে ১৯৩৯ সালে ম্যাটারনিটি বেনিফিট এ্যাক্ট বা মাতৃমঙ্গল আইন প্রণীত হয়। নারী চাকুরীজীবিরা সন্তান প্রসবের পূর্বে ১ মাস ও পরে ১ মাস বেতন ভাতাদিসহ ছুটি ভোগের অধিকার লাভ করে। শিশু শ্রমিকদের কল্যাণে শিশুশ্রম বন্ধের জন্য ১৯৩৮ সালে শিশু নিয়োগ আইন প্রণয়ন করা হয়। এ আইনে ১২ বছর পর্যন্ত বয়স্ক শিশুদের শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ বন্ধ করা হয়। ঝুঁকিপূর্ণ ক্ষেত্রে শিশুদের নিয়োগ নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৪৩ সালে ভবঘুরে আইন প্রণয়ন করে আশ্রয়হীন নারী ও শিশুদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। শেরে বাংলার উদ্যোগে বাংলাদেশে অনেক এতিমখানা প্রতিষ্ঠিত হয়।
শের-এ- বাংলা পল্লী উন্নয়নের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। গ্রামে গ্রামে পল্লী মঙ্গল সমিতি,  খাদ্য ভান্ডার, কুটির শিল্প প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি জনগণের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। ম্যালেরিয়া জ্বর থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য হক মন্ত্রীসভা কুইনাইন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা উন্নত করা হয়। অফিস আদালতে টাউট দমনের জন্য ১৯৩৭ সনে টাউট আইন প্রণয়ন করা হয়। দুর্ভিক্ষের সময় ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য ১৯৩৮ সনে দুর্ভিক্ষ বীমা আইন প্রণয়ন করেন।
চাকুরী বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে তিনি মুসলমানদের শতকরা ৫০ ভাগ এবং তফসিলি সম্প্রদায়ের জন্য শতকরা ১৫ ভাগ চাকুরীর নিশ্চয়তা প্রদান করে বিধি জারি করেন। অনুন্নত ও তাদের পত্রিকাগুলো ফজলুল হককে তীব্র ভাষায় সমালোচনা করে এবং অভিযোগ করে যে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে অনুপযুক্ত মুসলমানদের নিয়োগ করা হচ্ছে। ফজলুল হক সংবাদপত্রে ও আইন সভায় যোগ্যতার সংখ্যার ব্যাখ্যা ও তথ্য দিয়ে প্রমাণ করেন যে তিনি উপযুক্ত প্রার্থীদের চাকুরী দিচ্ছেন এবং ইংরেজী  ভাষায় পান্ডিত্য যোগ্যতার একমাত্র মাপকাঠি নয় তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন। এমনিভাবে আইন প্রণয়ন, বিধিজারী ও কর্মসূচি গ্রহণ করে বাংলার নির্যাতিত, নিপীড়িত কৃষক শ্রমিকদের জন্য মুক্তির দ্বার উদঘাটন করেন ফজলুল হক।
এ কে ফজলুল হক ছিলেন সর্বস্বত্যাগী। তার জীবনের সঞ্চিত অর্থ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গরীব ছাত্র ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়েছেন। কাবুলিওয়ালাদের কাছ থেকে টাকা ধার করে তিনি গরীব ছাত্রদের পড়ার খরচ, পরীক্ষার ফি, কন্যাদায়গ্রস্থ মাতাপিতাকে উদ্ধার এবং মসজিদ ও মাদ্রাসায় চাঁদা দিয়েছে। অনেক রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা তিনি করেছেন। হিন্দু, মুসলমান নির্বিশেষ সকলকে মুক্ত হস্তে দান করেছন। দেনার দায়ে তাকে দেউলিয়া পর্যন্ত হতে হয়েছে। তিনি আয় করেছেন অনেক কিন্তু নিজের বিলাসিতার জন্য ব্যয় করেছেন খুব কমই। এক এক সময় তার ঘরে খাবারের অভাব হয়েছে কিন্তু সে সময়ও তার দ্বার সবার জন্য উন্মুক্ত ছিল।
শের-এ- বাংলা ফজলুল হকের বিশাল ব্যক্তিত্ব বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণ। একদিকে তার প্রতিভা, পান্ডিত্য, বুদ্ধি ও যুক্তি এবং অন্যদিকে আবেগ, উচ্ছ্বাস, সরলতা, উদারতা ও সহিষ্ণুতা। বাংলার অবারিত মাঠ, উদ্দাম, নদ-নদী, উদার আকাশ, অপূর্ব শ্রামলি সব কিছু একত্রে সন্নিবেশ হয়ে যেন ফজলুল হকের ব্যক্তিত্ব আশ্রয় গ্রহণ করেছিল। বর্তমান সময়ের এই ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন ও সংস্কারে প্রয়োজন তার মত একজন মহীরুহ নির্মোহ মানব নেতৃত্ব। আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা শের-এ- বাংলার মত মানুষের জন্মস্থানে থেকেও তার আদর্শ ও শিক্ষা গ্রহণ করতে পারিনি, পারিনি তার কর্মময় জীবনকে গ্রহণ করে তার কাজের স্বীকৃতি দিতে। মানুষ ও জাতি হিসাবে এটা কি আমাদের অযোগ্যতা, ব্যর্থতা ও উদাসীনতা নয়?

সুন্দর জীবনবৃত্তান্ত (CV) তৈরী


আজ আমি আপনাদের জীবনবৃত্তান্ত (CV) তৈরীর নিয়ম নিয়ে আলোচনা করব।আমি দেখিছি চাকুরীপ্রার্থীরাতাদের জীবনবৃত্তান্ত সুন্দর এবং সঠিকভাবে তৈরী করার ব্যপারে গুরুত্ব প্রদান করে না  ফলশ্রুতিতে অনেকযোগ্য প্রার্থীই Job Interview তে ডাক পায় না এবং যোগ্যতা প্রমানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয় 
আপনার জীবনবৃত্তান্ত (CV) তৈরীর আগে যে সকল বাস্তবতার দিকে নজর রাখবেন
● একজন চাকুরীদাতা গড়ে একটি জীবনবৃত্তান্ত (CV)-এর উপর ৩০ সেকেন্ডের বেশী সময় দেয় না  সুতরাংএটি হতে হবে সংক্ষিপ্ত  তথ্যগুলোর উপস্থাপন হতে হবে সুস্পষ্ট  অপ্রয়োজনীয় বা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণতথ্য পরিহার করতে হবে 
● একজন অনভিজ্ঞ/সদ্য পাস করা চাকুরীপ্রার্থীর জীবনবৃত্তান্ত এক থেকে দুই পাতার বেশী হওয়া কোনভাবেইউচিত্ নয় 
● আপনার জীবনবৃত্তান্ত হচ্ছে আপনার নিজেকে বিপণন করার মাধ্যম  সুতরাং এটি হতে হবে আকর্ষণীয় তবে চটকদার কোন কিছু যেমন রঙিন কাগজ বা রঙিন কালি ব্যবহার করবেন না  কোন কিছু Highlightকরতে হলে সেটিকে Bold, italic বা underline করতে পারেন 
● মনে রাখবেনআপনার জীবনবৃত্তান্তের মধ্যে যদি কোন বানান ভুল বা ভাষাগত/ Grammatical ভুল থাকেতবে সম্ভাব্য চাকুরীদাতার আপনার সম্বন্ধে নেতিবাচক ধারণা হবে  এটি প্রকাশ পাবে যে আপনি কোন কাজইনির্ভুল ভাবে করতে সক্ষম নন  সুতরাং একটি CV তৈরীর পর সেটি নিজে ভাল করে পড়ুন এবং শুদ্ধ ইংরেজীজানেন এমন ব্যক্তিকে দেখিয়ে নিন 
● যখন আপনি কোন নির্দিষ্ট চাকুরী বিজ্ঞপ্তির (job announcement)-এর বিপরীতে আবেদন করার জন্যজীবনবৃত্তান্ত পাঠাবেনতখন চেষ্টা করুন আপনার CV সেই চাকুরীর চাহিদা অনুযায়ী তৈরী করতে (Customize your CV)  এর জন্য প্রয়োজন চাকুরী বিজ্ঞপ্তি ভাল করে পড়া এবং প্রতিষ্ঠানটি সম্বন্ধে কিছু গবেষণা(Research) করা  উদাহরণ স্বরুপ আপনি যদি জানেন যে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের যে কোন স্থানেনিয়োগ দিতে পারেতাহলে আপনি আপনার CV-তে উল্লেখ করতে পারেন আপনি বাংলাদেশের কোন কোনস্থানে পূর্বে অবস্থান করেছেন  অথবা কোন নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান এমন কোন লোক খুঁজছে যার একজন ‘সংগঠকের (organizer’) ভূমিকা পালন করতে হবেসেই ক্ষেত্রে আপনি যদি আপনার ছাত্রজীবনের কোনসাংগঠনকারীর ভূমিকা উল্লেখ করেন তবে আপনার CV নিয়োগকারীর কাছে আলাদা মূল্য পাবে 
§ এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে আপনি আপনার CV তে সঠিক তথ্য দিবেন  এমন কোন তথ্য দিবেন না যা আপনারJob interview-তে ভুল প্রমানিত হতে পারে 
জীবনবৃত্তান্তের (CV) বিভিন্ন অংশ
একটি জীবনবৃত্তান্তে (CV) যে তথ্যগুলো আপনি সুবিন্যস্ত ভাবে উপস্থাপন করবেন সেগুলো হচ্ছে
শিরোনাম (Title)
সার সংক্ষেপ (Career Summary) –> অভিজ্ঞতা সম্পন্নদের জন্য বেশী প্রয়োজন 
ক্যারিয়ার উদ্দেশ্য (Career objective)–>সদ্য পাশ করা চাকুরী প্রার্থীদের জন্য বেশী প্রয়োজন 
চাকুরির অভিজ্ঞতা (Experience)
শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education)
অতিরিক্ত তথ্য (Additional Information)
ব্যক্তিগত তথ্য (Personal Information)
রেফারেন্স (Reference)
শিরোনাম: (Title)
জীবনবৃত্তান্তের শুরুতেই থাকবে আপনার পুরো নাম  এটা বোল্ড (bold) হবে এবং একটু বড় ফন্টে লিখতে হবে(ডাক নাম পরিহার করুন তার পর থাকবে আপনার ঠিকানা (বর্তমান ঠিকানা যেখানে আপনাকে চিঠি দিলেআপনি পাবেন), ফোন নম্বর  -মেইল এড্রেস  এই অংশটুকু পৃষ্ঠার উপরে মধ্যখানে থাকবেযাতে তা প্রথমেইচোখে পরে 
Career Summary( সার সংক্ষেপ )
যে সকল ব্যক্তিদের - বছরের বেশী চাকরীর অভিজ্ঞতা আছে তাদের জন্য এটি বেশী প্রযোজ্য  এই অংশেআপনি সর্বোচ্চ - লাইনে উল্লেখ করুন আপনার পূর্ব চাকরীর অভিজ্ঞতার কর্মক্ষেত্রগুলো  আপনার পূর্বঅভিজ্ঞতার সাফল্যগুলো (Achievement) সংক্ষেপে তুলে ধরুন (যদি থাকে
Career Objective
এটি বেশী প্রযোজ্য সদ্য পাশ করা চাকুরী প্রার্থী বা অল্প অভিজ্ঞ ( /  বছরচাকুরী প্রার্থীদের জন্য  এই অংশেআপনি আপনার চাকুরীক্ষেত্রে বর্তমান লক্ষ্য (Immediate goal) উল্লেখ করুন এবং আপনার যোগ্যতা কিভাবেবিজ্ঞপ্তির (Advertised) চাকুরী বা যে প্রতিষ্ঠানে পাঠাচ্ছেনতার প্রয়োজন মেটাতে পারে তার প্রেক্ষিতে উপস্থাপনকরুন  চাকুরীর জন্য উপযুক্ত ইতিবাচক বৈশিষ্ট্যগুলো সংক্ষিপ্তভাবে উলেখ করুন  চাকুরী বিজ্ঞপ্তি বাকোম্পানির প্রয়োজনের সাথে খাপ খাইয়ে Career Objective লেখা জরুরী  আপনি কোম্পানিকে কি দিতেপারবেন তার ওপর গুরুত্বারোপ করুনকোম্পানির কাছ থেকে আপনি কি আশা করছেন তার ওপর নয় 
Experience: (কর্ম অভিজ্ঞতা)
অভিজ্ঞ পেশাজীবিদের জন্য এই অংশটি শিক্ষাগত যোগ্যতার আগেই আসা উচিত  সদ্য পাশ করা বা অল্পঅভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে আগে শিক্ষাগত যোগ্যতা (Education) এবং তার পরে experience আসা উচিত 
যে সকল তথ্য আপনার প্রতিটি পূর্ব অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে উল্লেখ করবেন সেগুলো হচ্ছে,
* Organization name (প্রতিষ্ঠানের নাম)
* Designation (
পদবী)
* Time period- From & To (
সময়কাল)
* Job responsibility (
দায়িত্ব)
* Special achievement (
উল্লেখযোগ্য সাফল্য)
আপনি যদি একই প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদে কাজ করে থাকেনতাহলে আলাদা আলাদা ভাবে তাউল্লেখ করুন 
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আপনি প্রথমেই উল্লেখ করবেন আপনার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা (most recent experience), তার পরে এক এক করে Resume Chronological Order- একটির পর একটি অভিজ্ঞতা উল্লেখকরবেন যা শেষ হবে আপনার সর্বপ্রথম অভিজ্ঞতা দিয়ে 
আপনার খুব কম গুরুত্বপূর্ণ বা কম সময়ের অভিজ্ঞতা উল্লেখ না করাই ভাল  তবে লক্ষ্য রাখবেন যে আপনারList of experience এর মধ্যে যাতে খুব বেশী Time gap না থাকে 
Education & Training (শিক্ষাগত যোগ্যতা  প্রশিক্ষণ)
আগেই বলা হয়েছে যে এই অংশটি সদ্য পাশ করা বা অল্প অভিজ্ঞদের জন্য Experience অংশের আগেই আসাউচিত্  Education অংশে আপনি আপনার ডিগ্রিগুলোর নাম উল্লেখ করবেন এবং নিম্নেবর্ণিত তথ্য প্রদানকরবেন 
ডিগ্রির নাম (যেমন: SSC, HSC, BCom)
কোর্স সময়কাল (কবে থেকে কবে)
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বোর্ডের নাম 
পরীক্ষার বছর এবং প্রয়োজনে ফলাফল প্রকাশের সময় 
ফলাফল/Result এবং যদি উল্লেখযোগ্য সাফল্য (যেমনমেধাতালিকায় স্থানথাকে তবে তার উল্লেখ করতেহবে 
Experience-এর মতো এক্ষেত্রেও আপনি আপনার সবচেয়ে সাম্প্রতিক ডিগ্রির উল্লেখ আগে করবেন এবং তারপর পর্যায়ক্রমিক ভাবে বাকিগুলো উল্লেখ করবেন 
লক্ষ্য রাখবেন আপনার কোন ডিগ্রির চূড়ান্ত ফলাফল এখনও প্রকাশ না হয়ে থাকলে সেই ডিগ্রির উল্লেখ করারসময় ব্র্যাকেটে ‘Appeared’ উল্লেখ করবেন  কোন কোর্সে অধ্যায়নরত থাকলে ‘Ongoing’ উল্লেখ করুন কোন ডিগ্রির ক্ষেত্রে আপনার Result যদি খুব খারাপ হয়ে থাকে তবে কোন Result- উল্লেখ করার দরকার নেই মনে রাখবেন একটি ডিগ্রির ফলাফল উল্লেখ করা  অন্যটি উল্লেখ না করা দৃষ্টিকটু 
আপনি যদি কোন বিশেষ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করে থাকেন এবং যদি তা আপনার কাজের যোগ্যতার সহায়কবলে মনে করেন তবে তা উল্লেখ করবেন  সেক্ষেত্রেও প্রশিক্ষণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম, Topics, প্রতিষ্ঠানের সময়(Duration) তারিখ উল্লেখ করবেন৷
প্রশিক্ষণের তালিকা আপনি Education অংশের নীচে দিতে পারেন 
অতিরিক্ত তথ্য / Additional Information
যে সকল তথ্য উপরে উল্লেখিত অংশগুলোর মধ্যে পড়ে না কিন্তু চাকরির সাথে সম্পর্কিত তা  বিভাগে বর্ণনাকরুন 
পেশাগত অর্জন / Professional Achievement
পদকসম্মাননা/ Award.
ভাষাগত দক্ষতা / Language Literacy
কম্পিউটারে দক্ষতা / Computer Skills.
লাইসেন্স,সরকারি পরিচয়পত্রপ্রকাশিত লেখা  সত্বাধিকার
স্বেচ্ছাসেবী কর্মকান্ড ইত্যাদি
ব্যক্তিগত তথ্য / Personal Information
এই অংশে পিতামাতাবর্তমান/স্থায়ী ঠিকানাধর্মযে সকল দেশ আপনি ভ্রমণ করেছেনশখ ইত্যাদি এখানেউল্লেখ করা যেতে পারে 
রেফারেন্স (Reference)
খেয়াল রাখবেন Reference অংশে আপনি আপনার নিকট আত্মীয়দের নাম উল্লেখ করবেন না  আপনাকেআপনার ছাত্র জীবনে বা কর্মজীবনে কাছ থেকে দেখেছে এমন ব্যক্তিকেই আপনি Reference হিসাবে উল্লেখকরবেন  অবশ্যই যাদেরকে Reference দিবেন তাদের ফোন নাম্বারঠিকানা এবং -মেইল (যদি থাকেউল্লেখকরবেন  সাধারণত Reference হিসাবে সর্বোচ্চ - জনের নাম উল্লেখ করাই শ্রেয়  তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণযে ব্যাপারের দিকে খেয়াল রাখতে হবে তা হচ্ছে আপনি যাদেরকে Reference হিসাবে উল্লেখ করেছেন সে সকলব্যাক্তিকে আপনার আগে থেকে জানাতে হবে যে আপনি তাদের Reference হিসাবে আপনার জীবনবৃত্তান্ত (CV)-তে উল্লেখ করেছেন  
ভাল হলে কমাস্ড করেতে ভুলেেবন না িকন্তু ভুল হলে কমান্ড করে সাহায্য করেেবন