উজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান
যেসব
প্যাকেটজাত সৌন্দর্য সামগ্রী আমাদের উজ্জ্বল ত্বকের
নিশ্চয়তা দেয় আমরা অনেকেই
তা একবার করে আমাদের
মুখে পরীক্ষা করে দেখে থাকি। এই
করতে গিয়ে আমাদের মুখের
ত্বকের বারোটা বাজে।
আমরা প্রায়ই ভুলে যাই
উজ্জ্বল ত্বক আসলে সুস্থ
ত্বকেরই বাইরের রূপ।
দীর্ঘস্থায়ী উজ্জ্বল ত্বকের নিশ্চয়তা কেবল
সুস্থ ত্বকই দিতে পারে,
বাইরের ত্বক নয়।
বাজারে চালু ত্বক ফর্সা
করা ক্রিমগুলি আমাদের ত্বকের বাইরের
অংশে কাজ করে।
এগুলির
রাসায়নিক উপাদান শেষ পর্যন্ত
ত্বকের ক্ষতিই করে।
রূপচর্চার জন্যে আমাদের হাতে
যখন হার্বাল বা ভেষজ উপাদানের
মত বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে
তখন কেন এসব রাসায়নিকের
ব্যবহার! হার্বাল রূপচর্চার জন্য যা যা
প্রয়োজন সব রয়েছে আপনার
হাতের নাগালে আপনার রান্নাঘরেই। এই
জিনিসগুলি ব্যবহার করে আপনি পাবেন
দীর্ঘস্থায়ী ভালো ত্বকের নিশ্চয়তা। খুব
সহজে তৈরি করতে পারবেন
এমন ১৫টি টিপস এখানে
দেওয়া হচ্ছে।
১. আঙুর
অনেক
ক্ষেত্রেই ত্বকের স্বাভাবিকতা কমে
গিয়ে ত্বকের ফর্সা ভাব
ও উজ্জলতা কালচে হতে থাকে। বাহ্যিক
ময়লা আবরণের স্তর এবং
সূর্য রশ্মি দ্বারা ত্বকে
কালচে ভাবের সৃষ্টি হয়। এক্ষেত্রে
ত্বক ফর্সা করতে আঙুরের
রস দারুণ উপকারি।
কয়েকটি আঙুর নিয়ে মুখে
আলতোভাবে ঘষুন। আঙুর
বেটে ফেসপ্যাক তৈরি করেও মুখে
লাগাতে পারেন।
২. শসার রস, গ্লিসারিন ও গোলাপ জল
সূর্যের
অতি বেগুনি রশ্মি ত্বক
পুড়িয়ে ফেলে। শসার
রস, গ্লিসারিন ও গোলাপ জলের
মিশ্রণ রোদে পোড়া ত্বকের
জন্যে উপকারি। রোদে
যাওয়ার আগে এবং বাসায়
ফিরে এগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে
লাগালে ত্বক উজ্জ্বল থাকবে।
৩. চন্দন, হলুদ ও দুধ
বয়সের
ছাপ, বিষণ্নতা, অযত্ন, ত্বকে স্বাভাবিক
আলো বাতাসের অভাবে, ত্বকের সতেজতা
হ্রাস পায়। চন্দন
গুড়ার সঙ্গে সামান্য হলুদ
গুড়া ও দুধ মিশিয়ে
পেস্ট তৈরি করুন।
পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ
অপেক্ষা করুন। ত্বক
সতেজ আর সুন্দর করতে
এই মিশ্রণটি বেশ কার্যকর।
৪. মধু ও দুধের সর
দুধের
সরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে
ত্বকে লাগালে ত্বক হবে
নরম আর উজ্জ্বল।
এই মিশ্রণটি আপনাকে ত্বক নিয়ে
অনেকটাই নিরুদ্বেগ রাখবে।
৫. দুধ,লবণ ও লেবুর রস
প্রাত্যহিক
কাজ কর্মের বিভিন্ন সময়
ত্বকের ভাজে ভাজে ধূলাবালি
ও ময়লা লেগে বাহ্যিক
ময়লা আবরণের স্তর লোমকূপের
মাধ্যমে টিস্যু কোষে জমা
হয়। ফলে
ত্বকে অক্সিজেন প্রবেশ করেত পারে
না। দুধের
মধ্যে এক চিমটি লবণ
আর লেবুর রস মেশান। এই
মিশ্রণটি আপনার ত্বকের লোমকূপ
পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে।
৬. টমেটোর রস
বাহ্যিক
ধূলাবালি, ময়লা, সূর্যের তাপ
ও অবেহলার কারণে ত্বকের স্বাভাবিক
মসৃণ ভাব কমে ত্বক
রূক্ষ হয়ে যায়।
ত্বক নরম করতে টমেটোর
রস খুবই কার্যকরী।
টমেটোর রসের সঙ্গে লেবুর
রস মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে
লাগালে ভালো ফল পাবেন।
৭. হলুদ গুড়া, গম ও তিল
অনেকের
ত্বকের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্চিত বা
অনাকাঙ্খিত লোম থাকে।
যা মুখের স্বাবাবিত সৌন্দর্য
নষ্ট করে। হলুদের
গুড়া,গমের ময়দা ও
তিলের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে
পেস্ট তৈরি করে মুখে
মাখুন। এই
মিশ্রণটি আপনার ত্বককে অনাকাঙ্ক্ষিত
লোমের হাত থেকে দূরে
রাখবে।
৮. বাঁধাকপির রস ও মধু
একটা
সময় সবারই বয়স বাড়তে
থাকে, এবং বয়স বাড়ার
সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে বিভিন্ন
বলিরেখার সৃষ্টি হয়।
বাঁধাকপির রস ও মধু
একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। বলিরেখা
দূর করতে এই মিশ্রণ
খুব উপকারী।
৯. গাজর
ত্বকে
অক্সিজেন এর অভাব হলে
উজ্জ্বলতা হ্রাস পায়।
ত্বকে ময়লা জমলে অক্সিজেন
প্রবেশ করতে পারে না। গাজরের
রস মুখে আনে প্রাকৃতিক
উজ্জ্বলতা। গাজরের
রস নিয়মিত মুখে লাগালে
ত্বক সতেজ থাকবে এবং
উজ্জ্বলতা বাড়বে।
১০. মধু ও দারুচিনি
খাদ্যভ্যাস,
ময়লা-ধূলাবালি, দুশ্চিন্তা, মানুষিক চাপ, নিদ্রাহীনতা, ধূমপান,
মাদক এবং অতিরিক্ত ঘুমের
অষুধ সেবনে মুখে ব্রণ
হয়। তিন
ভাগ মধু ও এক
ভাগ দারুচিনির গুড়া মিশিয়ে পেস্ট
তৈরি করুন। পেস্টটি
ব্রণের উপর লাগান।
সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে
ফেলুন। এই
পেস্টটি আপনার ব্রণ ও
ব্রণের দাগ দূর করবে।
১১. বাদাম ও লেবুর রস
শহরের
যান্ত্রিক পরিবেশে পর্যাপ্ত পরিমান প্রাকৃতিক বাতাস
এর অভাব রয়েছে।
এর ফলে ব্রন ও
ব্ল্যাকহেড এর সৃষ্টি হয়। বাদামের
তেল ও লেবুর রস
মিশিয়ে মুখে লাগান।
এই মিশ্রণটি ব্রণ ও ব্ল্যাকহেড
দূর করবে আর ত্বককে
রাখবে সতেজ ও সুন্দর।
১২. আ্যলোভেরার রস
ত্বকে
পর্যাপ্ত পরিমান পানির অভাবে
ত্বকের সজীবতা হ্রাস পায়। ত্বক
সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে পানি আবশ্যক। আ্যলোভেরার
রস মুখে লাগালে ত্বকের
দাগ দূর হয়।
আ্যলোভেরার রস ত্বকের পানিস্বল্পতা
দূর করে লাবণ্য ফিরিয়ে
আনে।
১৩. ঘি ও গ্লিসারিন
অনেকেই
শরীরের বিভিন্ন স্থানের ত্বকের মসৃণতা বজায়
রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন।
কিন্তু বাজারের ক্যামিক্যাল যুক্ত এবং বানিজ্যিকভাবে
বিক্রিত প্যাকেট জাত দ্রব্য অনেক ক্ষেত্রে
বিপরীত প্রভাব ফেলে।
ঘি ও গ্লিসারিনের মিশ্রণ
খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার।
রাসায়নিক ময়েশ্চারাইজারের বদলে এটি ব্যবহার
করে দেখুন। তফাত
নিজেই টের পাবেন।
১৪. মুলতানি মাটি, নিমপাতা, তুলসিপাতা, গোলাপ পাঁপড়ি এবং গোলাপ জল
মুলতানি
মাটি, গোলাপের পাঁপড়ি, নিম পাতার গুঁড়া,
তুলসি পাতার গুঁড়া সামান্য
গোলাপ জল বা লেবু
পাননির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট
তৈরি করুন। এটি
নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক সুস্থ
ও উজ্জ্বল থাকবে।
১৫. অ্যাপ্রিকট ও দই
দৈনন্দিন
জীবনে বিভিন্ন অনিয়ম ও ত্বকের
কোষে পানিশূন্যতা হলে ত্বক শুষ্ক
হয়ে যায়। অ্যাপ্রিকট
এবং দই মিশিয়ে পেস্ট
তৈরি করুন। এটি
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বক
সতেজ রাখে। যদি
আপনার ত্বক শুষ্ক হয়
তাহলে এর সঙ্গে মধু
মিশিয়ে মুখে লাগান।
সূত্র:
আমাদের সময়
0 comments:
Post a Comment