ঔষধের
দামে কারসাজি ! কোম্পানীর পোয়াবারো- নিষ্পেষিত ভোক্তা !!
-- একই ওষুধের
দামে ব্যবধান
২৫০%
- - -
স্কয়ার
ফার্মার সিপ্রোসিন
ট্যাবলেট পাইকারিতে
বিক্রি হচ্ছে
প্রতিটি ১৩
টাকায়।
একই গ্র“পের ওষুধ
এসকেএফের কুইনক্স
বিক্রি হচ্ছে
১২ টাকা,
ইনসেপ্টার বিউফ্লক্স ১৩ ও অ্যালবিয়নের
সিপ্রফ্লোক্সাসিন ৩ টাকা
৫০ পয়সায়। অর্থাৎ
ওষুধ এক
হলেও কোম্পানিভেদে
দামের ব্যবধান
সর্বোচ্চ ২৫০ শতাংশ। সিপ্রফ্লোক্সাসিনই
শুধু নয়,
কোম্পানিভেদে দামে বড় ধরনের ব্যবধান
রয়েছে অন্যান্য
ওষুধেও।
কম
দামে ওষুধ
বাজারজাতকারী কোম্পানিগুলো বলছে, বড় কোম্পানিগুলো
বিপণনে চিকিৎসকদের
পেছনে মোটা
অঙ্কের অর্থ
ব্যয় করছে। এ
কারণে তাদের
ওষুধের দাম
বেড়ে যাচ্ছে। যদিও
বড় কোম্পানির
প্রতিনিধিদের দাবি, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার
ও গুণগত
মান ঠিক
রাখার কারণেই
তাদের ওষুধ
উৎপাদনে খরচ
বেশি পড়ছে। দামও
সে কারণে
কিছুটা বেশি।
ওষুধের
বাজারে খোঁজ
নিয়ে জানা
যায়, অ্যালবিয়ন
ল্যাবরেটরিজের প্রতিটি রেনিটিডিন ট্যাবলেট পাইকারিতে
বিক্রি হচ্ছে
৬৩ পয়সায়। ব্রিস্টল
কোম্পানির নিওসেপটিন বিক্রি হচ্ছে ৬৫
পয়সায়।
অথচ একই
গ্র“পের
ওষুধ স্কয়ারের
নিওটেক ও
বেক্সিমকোর নিওসেপটিন আর বিক্রি হচ্ছে
প্রতিটি ২
টাকা ২৫
পয়সায়।
ওমেপ্রাজল ২০ মিলিগ্রামের প্রতিটি সেকলো
স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস
পাইকারিতে বিক্রি করছে ৪ টাকা
৩০ পয়সায়। এসকেএফের
একই গ্র“পের লোসেকটিল
বিক্রি হচ্ছে
৩ টাকা
২০ পয়সায়,
ইনসেপ্টার ওমেনিক্স ৪ টাকা ৩০
ও অ্যালবিয়নের
লোটিল ১
টাকায়।
ব্যথানাশক
ওষুধ ডাইক্লোফেনাক
গ্র“পের
প্রতিটি ডাইক্লোফেন
এসআর ট্যাবলেট
অপসোনিন বিক্রি
করছে ২
টাকা ৬০
পয়সায়।
স্কয়ারের একই
গ্র“পের
ওষুধ ক্লোফেনাক
এসআর বিক্রি
হচ্ছে ৩
টাকা ৫০
পয়সা ও
অ্যালবিয়নের ক্লোফেন মাত্র ৯৫ পয়সায়। একইভাবে
স্কয়ার ফার্মার
প্রতিটি সেফ-৩ ট্যাবলেট
বিক্রি হচ্ছে
৩১ টাকা,
ইনসেপ্টার এমিক্সেফ ২৮ ও অ্যালবিয়নের
সেফিক্সিম ১৫ টাকায়।
কোম্পানিভেদে
ওষুধের দামে
বড় ধরনের
এ ফারাক
সম্পর্কে ব্রিস্টল
ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
শমসের আলম
ভুঁইয়া বলেন,
ছোট-বড়
সব কোম্পানিই
একই কাঁচামাল
ব্যবহার করছে। মোটা
অঙ্কের মুনাফা
করায় বড়
কোম্পানির ওষুধের দাম বেশি।
বিপণন কৌশল
হিসেবে চিকিৎসকদের
পেছনে তারা
বেশি ব্যয়
করে।
অন্যদিকে ছোট
কোম্পানিগুলো দোকানির মাধ্যমে সরাসরি ভোক্তার
কাছে ওষুধ
পৌঁছে দেয়। তাই
তারা অপেক্ষাকৃত
কম দামে
ওষুধ বিক্রি
করতে পারছে।
বাজার
চাহিদাকে পুঁজি
করে অনেকে
একচেটিয়া ব্যবসা
করছে বলে
অভিযোগ রয়েছে
খোদ ওষুধ
শিল্পসংশ্লিষ্টদের মধ্যেই।
কয়েকটি ওষুধ
কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, একটি
সিপ্রফ্লোক্সাসিন ট্যাবলেট তৈরিতে
সর্বোচ্চ ব্যয় ৬ টাকা।
যদিও বড়
কোম্পানিগুলো তা বিক্রি করছে ১২-১৩ টাকায়। অথচ
এ গ্র“পের সব
ওষুধ একই
কাঁচামালে তৈরি হয়। আর
প্রতিটি কোম্পানিই
গুণগত মান
বজায় রাখার
চেষ্টা করে।
বিপণন
কার্যক্রমে বড় ধরনের অর্থ ব্যয়ের
কথা স্বীকার
করে স্কয়ার
ফার্মাসিউটিক্যালসের পরিচালক মিজানুর
রহমান বলেন,
একেক কোম্পানির
মার্কেট পলিসি
একেক রকম। আর
ওষুধের বিশেষ
বিপণন ব্যবস্থা
সারা বিশ্বেই
প্রচলিত।
নতুন চিকিৎসকদের
কাছে ওষুধের
নাম-পরিচয়
পৌঁছে দিতে
কোম্পানির প্রমোশন কর্মকর্তারা নিয়মিত চিকিৎসকদের
কাছে যান,
বিশেষ কোনো
ওষুধ সম্পর্কে
বিস্তারিত জানান। এক্ষেত্রে ব্যয়
বেশি হওয়া
স্বাভাবিক।
ওষুধের গুণগত
আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে খরচ
বেশি হচ্ছে। উন্নতমানের
কাঁচামাল ও
আধুনিক প্রযুক্তি
ব্যবহার করার
কারণে উৎপাদন
খরচ বেশি
পড়ছে।
খোঁজ
নিয়ে জানা
যায়, দেশে
ওষুধ তৈরির
কোম্পানি রয়েছে
প্রায় ৩০০। এর
মধ্যে ভালো
মানের ওষুধ
তৈরি করছে
২০-২৫টি
কোম্পানি।
সঠিক মান
নিশ্চিত করে
কোম্পানিগুলো ওষুধ তৈরি করছে কিনা,
তা দেখার
দায়িত্ব ওষুধ
প্রশাসন অধিদফতরের। প্রতিষ্ঠানটির
পরিচালক গোলাম
কিবরিয়ার দাবি,
ছোট বা
বড় কোম্পানির
ওষুধে গুণগত
মানে কোনো
তফাত নেই। নির্দিষ্ট
নিয়ম অনুসরণ
করেই তারা
ওষুধ তৈরি
করছে।
তবে মান
নিশ্চিত করার
বিষয়টি ওষুধ
প্রশাসন অধিদফতর
দেখলেও ওষুধের
দাম নির্ধারণে
কোম্পানিগুলো স্বাধীন। তাই নিজস্ব
বিপণন কৌশল
অনুযায়ী কোম্পানিগুলো
বাজারে ওষুধ
বিক্রি করছে।
ওষুধ
বিক্রেতারা বলছেন, একই গ্র“পের
ওষুধের দামে
বিশাল ব্যবধান
হলে তাদেরকে
গ্রাহকের প্রশ্নের
মুখে পড়তে
হয়।
অনেক গ্রাহক
ক্ষোভ প্রকাশ
করে নানা
ধরনের কথা
বলেন।
কিন্তু এক্ষেত্রে
তাদের করার
কিছুই নেই। কোম্পানি
যে দাম
নির্ধারণ করে
দেয়, সে
দামেই তাদের
ওষুধ বিক্রি
করতে হয়। রাজধানীর
পুরান ঢাকার
রাতুল মেডিসিনের
বিক্রেতা কবির
আহমেদ বলেন,
প্রতিটি গ্র“পের ওষুধ
যেমন কম
দামের রয়েছে,
তেমনি বিশি
দামেরও রয়েছে। বড়
কোম্পানিগুলো সবসময় ওষুধের দাম বেশি
রাখে।
একমি
ল্যাবরেটরি লিমিটেডের বিপণন কর্মকর্তা ফখরুল
ইসলাম মনে
করেন, কোম্পানিভেদে
ওষুধের দামে
কিছুটা ফারাক
থাকতেই পারে। প্রতিযোগিতামূলক
বাজারে সবাই
দাম কমিয়ে
পণ্য বিক্রির
চেষ্টা করে। তবে
অস্বাভাবিক কম দামে ওষুধ বিক্রি
হলে সেগুলোর
মান নিয়ে
প্রশ্ন থেকে
যায়।
আর যেসব
ওষুধ বিক্রি
করে বেশি
লাভ হয়,
দোকানিরা সেগুলোই
কৌশলে ভোক্তার
হাতে দেন। শহরের
চেয়ে গ্রামে
এ ধরনের
কাজ বেশি
হচ্ছে।
সূত্র
– দৈনিক আমাদের সময়
0 comments:
Post a Comment