ঢাকার যে ৮ টি মনোরম স্থান নিমিষেই আপনার মন ভালো করে দেবে!
(প্রিয়.কম) ভেবে দেখুন তো আপনার অনেক মন খারাপ করছে, বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারছেন না, বদ্ধ ঘরের মধ্যে আরও বেশি দম বন্ধ হয়ে আসছে। এই করুণ অবস্থাতে আপনি কী করতে পারেন? ঢাকার মত একটি যান্ত্রিক শহরে কও্ভাববে পেতে পারেন একটুখানি খোলা হাওয়া? আর চিন্তা করতে হবে না। ঢাকার চারপাশে ভালো করে খেয়াল করে দেখুন এমন যান্ত্রিকতার মাঝেও এমন কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে গেলে মন এমনিতেই অনেক ভালো হয়ে যায়। সত্যি বলছি, একেবারে মিথ্যা নয়। বিশ্বাস না হলে মন খারাপের মুহূর্তে একবার যাচাই করে দেখতে পারেন। ঘুরে আসতে পারেন এসব জায়গায়। শুধু মনে মনে বিশ্বাস রাখতে হবে আপনার মন ভালো হবেই।
১. হাতিরঝিল :
বর্তমানে হাতিরঝিল সবাই চেনেন। না দেখলে বিশ্বাস হবে না যে এই হাতিরঝিল ছবির তুলনায় বাস্তবে এতটাই সুন্দর। হাতিরঝিলের এই প্রকল্পটি ২০০৭ সালে অনুমোদিত হয় মূলত রাজধানীর বাড্ডা, মৌচাক, গুলশান, রামপুরা, তেজগাঁও এবং মগবাজারের যানজট কমানোর জন্য। কিন্তু প্রকল্পটি এমন সুন্দরভাবে বাস্তবায়ন করা হয়েছে যে অনেক ঢাকাবাস্ইী বর্তমানে তাদের অবসর সময় কাটাতে এই হাতিরঝিলে ছুটে যান। আপনার যদি সত্যিই মন খারাপ হয়ে যায় কোনো এক সময় আপনিও চলে যেতে পারেন এই হাতিরঝিলে। এর সুমধুর খোলা বাতাস আপনার মনকে নিমেষেই ভালো করে দিতে পারে। সন্ধ্যার দিকে যে আলোর খেলা দেখা যায় সেটিও আপনার মনকে ভালো করে দিতে বাধ্য। তাই এবারের মন খারাপে বাসায় গুটিসুটি মেরে বসে না থেকে চলে যান এই সুন্দর জায়গাটিতে।
২. আশুলিয়া :
সাভারের পরে আশুলিয়া এমন একটি সুন্দর জায়গা যেটিকে অনেকেই ঢাকার সমুদ্র সৈকত বলে আখ্যা দিয়ে থাকেন। সমুদ্র সৈকতের আবহাওয়া পাওয়া যাবে এই জায়গাটিতে। বিশেষ করে বর্ষাকালে দিগন্ত বিস্তৃত পানি আর পানির ঢেউ আপনাকে ভুলিয়ে দেবে মনের সকল কষ্ট। শরৎকালে আকাশের উপরে মেঘের খেলা আর নিচে ছলছলে পানি আপনার মনকে করে তুলবে আনন্দিত। আপনি মন ভরে উপলব্ধি করতে পারবেন সৌন্দর্যের মোহনীয়তা। আপনি চাইলে এই আশুলিয়াতে নৌকা ভ্রমণও করতে পারবেন। নৌকা ভ্রমণে আপনার মন আরও অনেক বেশি সতেজ হয়ে পড়বে। দেখবেন মন কখন যে ভালো হয়ে গেছে আপনি নিজেও জানেন না।
৩. সাফারি পার্ক :
গাজীপুরের সাফারি পার্কের নাম অনেকেই হয়ত শুনে থাকবেন। আবার অনেকে আছেন যারা গিয়েছেনও। মন খারাপের সময়ে বিভিন্ন পশুপাখির সাথে যদি কিছু সময় কাটান তাহলে অবশ্যই আপনার অনেক ভালো লাগবে। এমনই একটি পার্ক হল এই সাফারি পার্ক। যেখানে রয়েছে অনেক পশুপাখি। কিন্তু মজার বিষয় হল আমরা সচরাচর চিড়িয়াখানাগুলোতে দেখি যে পশুপাখি খাঁচার মধ্যে থাকে, এখানে আপনি নিজেই খাঁচার মধ্যে থাকবেন আর চারপাশে খোলা জায়গায় থাকবে ভয়ঙ্কর সব পশুপাখি। এমন অদ্ভুৎ নিয়ম দেখে আপনার মন এমনিতেই ভালো হয়ে যাবে, আর পশুপাখিদের অনেক কাছ থেকে দেখে আরও বেশি ভালো লাগবে।
৪. কুড়িল ফ্লাইওভার :
আপনি হয়ত ভাবছেন যে ফ্লাইওভারে কিভাবে মন ভালো করা যায়। এর উত্তরে বলতে হয় আপনি যদি সৌন্দর্যটাকে উপলব্ধি করতে পারেন তাহলে সেই সৌন্দর্যের নির্যাস আপনার মনকে ভালো করে দিবে। আপনি যখন একটি সুন্দর জিনিস দেখেন তখন আপনার মনে এ ধরনের ভালোলাগা তৈরি করে। আর তা থেকেই আপনার খারাপ মন ভালো হয়ে যেতে পারে। রেডিসনের পরের এই কুড়িল ফ্লাইওভারটি এত সুন্দর আপনি চাইলেই এই সৌন্দর্য দেখার জন্য সেখানে চলে যেতে পারেন। এই ফ্লাইওভারটি থেকে যেন সমস্ত ঢাকা শহরকে দেখা যায়। যদিও সেখানে নেমে দেখাটা খুবই বিপজ্জনক। সন্ধ্যার পরে এর সৌন্দর্য আরও অনেক বেশি বেড়ে যায়। তাই মন খারাপের যেকোনো মুহূর্তে চলে যেতে পারেন এই কুড়ি ফ্লাইওভারটিতে।
৫. মিরপুরের এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার :
বাংলাদেশে তৈরি সুন্দর ফ্লাইওভারগুলোর মধ্যে এটিও অন্যতম। মিরপুর ১২ এর পর থেকে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে এয়ারপোর্টের কাছাকাছি গিয়ে। এটি থেকেও ঢাকার বেশ কিছু এলাকা দেখা যায়। আপনি যদি মিরপুরের বাসিন্দা হয়ে থাকেন তাহলে মন খারাপের মুহূর্তে চলে যেতে পারেন এই মিরপুরের ফ্লাইওভারে।
৬. ধানমন্ডি লেক :
ধানমন্ডি লেক এখন ঢাকার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি। ১৯৯৫ সালে সংস্কার করে লেকটিকে নতুন রূপ দেয়া হয়। ২০১৩ সাল হতে এর সংস্কারের কাজ পুরোদমে আবার শুরু হয়েছে। ঢাকার হাজারীবাগ, মোহাম্মদপুর, কলাবাগান, মিরপুর রোড ও শুক্রাবাদ এলাকার মধ্যবর্তী স্থানে ধানমন্ডি লেকের বিশাল অবস্থান। গাছ-গাছালি, লেক, দৃষ্টি নন্দন লোহার সেতু ,পানির ফোয়ারা, লেকের পাড়ের ছোট কুটির ইত্যাদি মিলিয়ে লেকটি বেশ আকর্ষণীয় বলা যায়। ধানমন্ডি লেকটির নির্দিষ্ট কোনো খোলা ও বন্ধের সময়সূচী নেই তবে ভোর ৫.০০টা থেকে রাত ১০.০০টা পর্যন্ত দর্শনার্থী অবস্থান করতে পারবেন। লেকটিতে প্রবেশের জন্য কোন টিকেটের প্রয়োজন হয় না। আপনার মন খারাপ হলে চাইলেই এই লেকটিতে চলে যেতে পারেন। দেখবেন আশেপাশের প্রাকৃতিক পরিবেশে আপনার মন বেশ ভালো হয়ে উঠেছে।
৭. গুলশান লেক :
গুলশান ঢাকার একটি অভিজাত এলাকা। গুলশান এবং বনানীর মাঝামাঝিতে অবস্থিত গুলশান লেকটিও বেশ সুন্দর দেখতে। বিশেষ করে রাতের বেলায় এর শোভা বেড়ে যায় শতগুণ। আপনার মন খারাপ হলে চলে যেতে পারেন গুলশান লেকে। গুলশান লেকের উপরে যে ব্রীজটা রয়েছে সেই ব্রীজে বসে থেকেও অবলোকন করতে পারেন এর সৌন্দর্য। প্রয়োজনে কোনো খাবার কিনে নিয়ে গিয়েও একা একা বসে খেতে পারেন। ঢাকার মত ব্যস্ত একটি জায়গায় এই জায়গাটি আপনার অনেক ভালো লাগবে।
৮. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় :
হ্যাঁ আপনি যা ভাবছেন তাই, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের মধ্যে আপনি সম্পূর্ণভাবে একটা সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পরিবেশ পেয়ে থাকবেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এমনিতেই শীতের মৌসুমে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এখানে আসা শীতের পাখিগুলোর জন্য। সাইবেরিয়া ও অন্যান্য দেশ থেকে আসা এই শীতের পাখিগুলোকে দেখতে প্রতি শুক্রবারেই ক্যাম্পাসে ভিড় করে বহু সংখ্যক মানুষ। এছাড়া গরমের মৌসুমেও একটুখানি হিমেল হাওয়া পেতে ভিড় করে ঢাকাবাসীরা। সবুজে ঘেরা এই ক্যাম্পাসটি এমনিতেই অনেক বেশি শীতল থাকে। তাই আপনার যদি কোনো কারণে মন খারাপ হয়ে থাকে তাহলে এই ক্যাম্পাসটিতে ঘুরে আসতে পারেন। দেখবেন সবুজের ছোঁয়ায় এবং ছাত্রছাত্রীদের তারুণ্যতা দেখে আপনার মন নিমেষেই ভালো হয়ে যাবে।
সূত্র -Farzana Rinky , টেক প্রিয়।
0 comments:
Post a Comment