সত্য জানি, সত্য মানি এবং সত্যের সাথে থাকি। সকল খবর হোক সত্য ও নিরপেক্ষ।

সত্যকে অস্বীকার কারনে, গত চার দশকে জাতি হিসাবে আমরা মাথা উচুঁ করে দাঁড়াতে পারিনি । স্বাধীনতার প্রায় অধ শতাব্দীতে জাতি তার কাঙ্তিত সাফল্য পায়নি।

মোর নাম এই বলে ক্ষ্যাত হোক – আমি তোমাদেরই লোক

যাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এ জাতি সমৃদ্ধিলাভ করেছে - আমরা তাদের ভুলব না । তোমরা অমর হয়ে থাকবে জাতীর ভাগ্যাকাশে। আমাদের ভালবাসা ও দোয়া রইল।

IT BD SOFT. একটি বিশ্বস্থ আইটি ট্রেনিং সেন্টার

------Pls visit http://itbdsoft.tk ------- কম্পিউটার শিক্ষা প্রসার ও বিকাশে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। শিক্ষা হোক সবার জন্য উম্মুক্ত ও সহজলভ্য।

পযটন হোক – জাতীয় উন্নতির একমাত্র হাতিয়ার।

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া, ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া। কক্সবাজার, সুন্দরবন, কুয়াকাটা, নীলগিরি সহ হাজারো দৃষ্টি নন্দন অপার সৌন্দার্য ছড়িয়ে আছে এ জমিনে – জানি ও সমৃদ্ধ করি দেশমাতৃকাকে।

IT BD SOFT. একটি বিশ্বস্থ আইটি ট্রেনিং সেন্টার

------Pls visit http://itbdsoft.tk ------- কম্পিউটার শিক্ষা প্রসার ও বিকাশে / এছাড়াও আমরা ডোমিন- হোষ্টিং বিক্রি /আপনার সাইটের ভিজিটর বাড়ানো / সাইটিকে কে গুগল টপে আনতে আমাদের সাহায্য নিন।

Monday, March 23, 2015

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য প্রাকৃতিক উপাদান


যেসব প্যাকেটজাত সৌন্দর্য সামগ্রী আমাদের উজ্জ্বল ত্বকের নিশ্চয়তা দেয় আমরা  অনেকেই তা একবার করে আমাদের মুখে পরীক্ষা করে দেখে থাকি এই করতে গিয়ে আমাদের মুখের ত্বকের বারোটা বাজে আমরা প্রায়ই ভুলে যাই উজ্জ্বল ত্বক আসলে সুস্থ ত্বকেরই বাইরের রূপ দীর্ঘস্থায়ী উজ্জ্বল ত্বকের নিশ্চয়তা কেবল সুস্থ ত্বকই দিতে পারে, বাইরের ত্বক নয় বাজারে চালু ত্বক ফর্সা করা ক্রিমগুলি আমাদের ত্বকের বাইরের অংশে কাজ করে
cute lady , fairness
এগুলির রাসায়নিক উপাদান শেষ পর্যন্ত ত্বকের ক্ষতিই করে রূপচর্চার জন্যে আমাদের হাতে যখন  হার্বাল বা ভেষজ উপাদানের মত বিকল্প ব্যবস্থা রয়েছে তখন কেন এসব রাসায়নিকের ব্যবহার! হার্বাল রূপচর্চার জন্য যা যা প্রয়োজন সব রয়েছে আপনার হাতের নাগালে আপনার রান্নাঘরেই এই জিনিসগুলি ব্যবহার করে আপনি পাবেন দীর্ঘস্থায়ী ভালো ত্বকের নিশ্চয়তা খুব সহজে তৈরি করতে পারবেন এমন ১৫টি টিপস এখানে দেওয়া হচ্ছে

. আঙুর

অনেক ক্ষেত্রেই ত্বকের স্বাভাবিকতা কমে গিয়ে ত্বকের ফর্সা ভাব উজ্জলতা কালচে হতে থাকে বাহ্যিক ময়লা আবরণের স্তর এবং সূর্য রশ্মি দ্বারা ত্বকে কালচে ভাবের সৃষ্টি হয় এক্ষেত্রে ত্বক ফর্সা করতে আঙুরের রস দারুণ উপকারি কয়েকটি আঙুর নিয়ে মুখে আলতোভাবে ঘষুন আঙুর বেটে ফেসপ্যাক তৈরি করেও মুখে লাগাতে পারেন

. শসার রস, গ্লিসারিন গোলাপ জল

সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি ত্বক পুড়িয়ে ফেলে শসার রস, গ্লিসারিন গোলাপ জলের মিশ্রণ রোদে পোড়া ত্বকের জন্যে উপকারি রোদে যাওয়ার আগে এবং বাসায় ফিরে এগুলি একসঙ্গে মিশিয়ে লাগালে ত্বক উজ্জ্বল থাকবে

. চন্দন, হলুদ দুধ

বয়সের ছাপ, বিষণ্নতা, অযত্ন, ত্বকে স্বাভাবিক আলো বাতাসের অভাবে, ত্বকের সতেজতা হ্রাস পায় চন্দন গুড়ার সঙ্গে সামান্য হলুদ গুড়া দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন পেস্টটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন ত্বক সতেজ আর সুন্দর করতে এই মিশ্রণটি বেশ কার্যকর

. মধু দুধের সর

দুধের সরের সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগালে ত্বক হবে নরম আর উজ্জ্বল এই মিশ্রণটি আপনাকে ত্বক নিয়ে অনেকটাই নিরুদ্বেগ রাখবে

. দুধ,লবণ লেবুর রস

প্রাত্যহিক কাজ কর্মের বিভিন্ন সময় ত্বকের ভাজে ভাজে ধূলাবালি ময়লা লেগে বাহ্যিক ময়লা আবরণের স্তর লোমকূপের মাধ্যমে টিস্যু কোষে জমা হয় ফলে ত্বকে অক্সিজেন প্রবেশ করেত পারে না দুধের মধ্যে এক চিমটি লবণ আর লেবুর রস মেশান এই মিশ্রণটি আপনার ত্বকের লোমকূপ পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করবে

. টমেটোর রস

বাহ্যিক ধূলাবালি, ময়লা, সূর্যের তাপ অবেহলার কারণে ত্বকের স্বাভাবিক মসৃণ ভাব কমে ত্বক রূক্ষ হয়ে যায় ত্বক নরম করতে টমেটোর রস খুবই কার্যকরী টমেটোর রসের সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিয়মিত ত্বকে লাগালে ভালো ফল পাবেন

. হলুদ গুড়া, গম তিল

অনেকের ত্বকের বিভিন্ন স্থানে অবাঞ্চিত বা অনাকাঙ্খিত লোম থাকে যা মুখের স্বাবাবিত সৌন্দর্য নষ্ট করে হলুদের গুড়া,গমের ময়দা তিলের তেল একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে মাখুন এই মিশ্রণটি আপনার ত্বককে অনাকাঙ্ক্ষিত লোমের হাত থেকে দূরে রাখবে

. বাঁধাকপির রস মধু

একটা সময় সবারই বয়স বাড়তে থাকে, এবং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ত্বকে বিভিন্ন বলিরেখার সৃষ্টি হয় বাঁধাকপির রস মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান বলিরেখা দূর করতে এই মিশ্রণ খুব উপকারী

. গাজর

ত্বকে অক্সিজেন এর অভাব হলে উজ্জ্বলতা হ্রাস পায় ত্বকে ময়লা জমলে অক্সিজেন প্রবেশ করতে পারে না গাজরের রস মুখে আনে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা গাজরের রস নিয়মিত মুখে লাগালে ত্বক সতেজ থাকবে এবং উজ্জ্বলতা বাড়বে

১০. মধু দারুচিনি

খাদ্যভ্যাস, ময়লা-ধূলাবালি, দুশ্চিন্তা, মানুষিক চাপ, নিদ্রাহীনতা, ধূমপান, মাদক এবং অতিরিক্ত ঘুমের অষুধ সেবনে মুখে ব্রণ হয় তিন ভাগ মধু এক ভাগ দারুচিনির গুড়া মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন পেস্টটি ব্রণের উপর লাগান সারারাত রেখে পরদিন ধুয়ে ফেলুন এই পেস্টটি আপনার ব্রণ ব্রণের দাগ দূর করবে

১১. বাদাম লেবুর রস

শহরের যান্ত্রিক পরিবেশে পর্যাপ্ত পরিমান প্রাকৃতিক বাতাস এর অভাব রয়েছে এর ফলে ব্রন ব্ল্যাকহেড এর সৃষ্টি হয় বাদামের তেল লেবুর রস মিশিয়ে মুখে লাগান এই মিশ্রণটি ব্রণ ব্ল্যাকহেড দূর করবে আর ত্বককে রাখবে সতেজ সুন্দর

১২. আ্যলোভেরার রস

ত্বকে পর্যাপ্ত পরিমান পানির অভাবে ত্বকের সজীবতা হ্রাস পায় ত্বক সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে পানি আবশ্যক আ্যলোভেরার রস মুখে লাগালে ত্বকের দাগ দূর হয় আ্যলোভেরার রস ত্বকের পানিস্বল্পতা দূর করে লাবণ্য ফিরিয়ে আনে

১৩. ঘি গ্লিসারিন

অনেকেই শরীরের বিভিন্ন স্থানের ত্বকের মসৃণতা বজায় রাখতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু বাজারের ক্যামিক্যাল যুক্ত এবং বানিজ্যিকভাবে বিক্রিত প্যাকেট জাত  দ্রব্য অনেক ক্ষেত্রে বিপরীত প্রভাব ফেলে ঘি গ্লিসারিনের মিশ্রণ খুব ভালো ময়েশ্চারাইজার রাসায়নিক ময়েশ্চারাইজারের বদলে এটি ব্যবহার করে দেখুন তফাত নিজেই টের পাবেন

১৪. মুলতানি মাটি, নিমপাতা, তুলসিপাতা, গোলাপ পাঁপড়ি এবং গোলাপ জল

মুলতানি মাটি, গোলাপের পাঁপড়ি, নিম পাতার গুঁড়া, তুলসি পাতার গুঁড়া সামান্য গোলাপ জল বা লেবু পাননির সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বক সুস্থ উজ্জ্বল থাকবে

১৫. অ্যাপ্রিকট দই

দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন অনিয়ম ত্বকের কোষে পানিশূন্যতা হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায় অ্যাপ্রিকট এবং দই মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং ত্বক সতেজ রাখে যদি আপনার ত্বক শুষ্ক হয় তাহলে এর সঙ্গে মধু মিশিয়ে মুখে লাগান

সূত্র: আমাদের সময় 

Sunday, March 15, 2015

শেষ আটে লড়বে যারা ঃ জেনে রাখুন ভেনু সময় দল

ক্রিকেট ওয়াল্ড কাপ 2015   

শেষ আটে লড়বে যারা ঃ জেনে রাখুন ভেনু সময় দল


word cup 2015, logo cricket 2015

শেষ আট থেকে সেমিফািইনালে যাবার লড়াইয়ে - বাংলাদেশের জন্য অসংখ্য শুভকামনা রইল।


তারিখ            ভেনু                                    বিডি সময়                দল
১৮ মার্চ `১৫:       সিডনির ক্রিকেট গ্রাউন্ড        সকাল টা ৩০ মিনিট    দক্ষিণ আফ্রিকা শ্রীলঙ্কা
১৯ মার্চ `১৫:       মেলবোর্নে                             সকাল টা ৩০ মিনিট     বাংলাদেশ ও ভারত  
২০ মার্চ `১৫:        এডিলেড ওভাল       সকাল টা ৩০ মিনিট      অস্ট্রেলিয়া বনাম পাকিস্তান

২১ মার্চ `১৫:        ওয়েলিংটন          সকাল টা                           নিউ জিল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ

Monday, February 9, 2015

বাংলাদেশ থেকে মাসে ১০ হাজার কর্মী সৌদি আরব যাবে

বাংলাদেশ থেকে মাসে ১০ হাজার কর্মী সৌদি আরব যাবে

 করুন
বাংলাদেশ থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার শ্রমিক সৌদি আরবে কাজের সুযোগ পাবে।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরব সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এসব কর্মীদের সৌদি আরব যাওয়ার সব খরচ বহন করবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি।
সৌদি আরব সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকের পর বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী জানান শ্রমিক প্রতি ব্যয় হবে সর্বোচ্চ বিশ হাজার টাকা।
বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক নেয়া প্রায় ছয় বছর বন্ধ থাকার পর গত মাসেই সেদেশের সরকার বাংলাদেশী শ্রমিক নেয়ার উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়।
এর পর জনশক্তি রপ্তানি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে সৌদি আরবের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়ের একজন উপমন্ত্রীর নেতৃত্বে গতকাল ঢাকায় আসে।
সচিবালয়ে সৌদি আরবের প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠকের পর প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান মূলত সরকারি ব্যবস্থাপনাতেই কর্মীরা সৌদি আরব যাবে। তবে বেসরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারকরাও এতে সম্পৃক্ত থাকবে।
মন্ত্রী জানান একজন শ্রমিকের সৌদি আরব যেতে পনের বা বিশ হাজার টাকার বেশি খরচ হবেনা এবং সেটি বহন করবে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি।
তিনি আরও জানান অন্তত দশটি ক্যাটগরিতে প্রতি মাসে ১০ হাজার বাংলাদেশী শ্রমিক সৌদি আরবে কাজের সুযোগ পাবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশি শ্রমিকরা সৌদিতে গিয়ে প্রতি মাসে বারশ থেকে পনেরশ সৌদি রিয়েল বেতন পাবেন।
সূত্র- বিবিসি বাংলা নিউজ।

Tuesday, November 11, 2014

যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ১৯৭৪ সালে নিষ্পত্তি হয়নি ঃ হামিদ মীর

যুদ্ধাপরাধ ইস্যু ১৯৭৪ সালে নিষ্পত্তি হয়নি ঃ হামিদ মীর
আমাদের সময়.কম : ১২/১১/২০১৪

৯৮২০৩থ১ডেস্ক রিপোর্ট : হামিদ মীর পাকিস্তানের একজন খ্যাতনামা সাংবাদিক, টেলিভিশন উপস্থাপক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা ও নিষ্ঠুরতার জন্য বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সরব পাকিস্তানিদের অন্যতম তিনি। এ বিষয়ে গত সপ্তাহে তাঁরই লেখা এক নিবন্ধ অনুমতি ছাড়া সম্পাদনা করে প্রকাশের পর তিনি পাকিস্তানের উর্দু দৈনিক জংয়ে লেখা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছেন। মাত্র ৩০ বছর বয়সেই পাকিস্তানের একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা হামিদ মীর বর্তমানে পাকিস্তানের জিও নিউজের নির্বাহী সম্পাদক। গত রবিবার কালের কণ্ঠকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, যুদ্ধাপরাধের বিচার, পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াসহ বিভিন্ন বিষয় উঠে এসেছে। হামিদ মীরের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কালের কণ্ঠের কূটনৈতিক প্রতিবেদক মেহেদী হাসান। সাক্ষাৎকারটি আমাদেরসময় ডটকমের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

কালের কণ্ঠ : হামিদ মীর, গত বছরের মার্চ মাসে ঢাকায় শেরাটন হোটেলের বারান্দায় বসে আপনার সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময়ের একটি ঘটনা বলতে চাই। আপনি আমাদের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ সম্মাননা নিতে আসা আরো কয়েকজন পাকিস্তানি আপনার কাছে এসে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন। এরপর আপনি আমাদের বলেছিলেন, তাঁরা ভয় পাচ্ছেন। কারণ বাংলাদেশ নিয়ে আপনার বক্তব্য আবার না ‘পাকিস্তানবিরোধী’ হয়ে যায়! বাংলাদেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা নেওয়ার পর আপনি পাকিস্তান ফেরার পর কি কোনো সমস্যায় পড়েছিলেন? আপনার সেদিনের সহযাত্রীদের মতো আপনি কি আজও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলে ঝামেলায় পড়ার আশঙ্কা করছেন?

হামিদ মীর : প্রথমে আমি বলব, ২০১৩ সালে আমি পাকিস্তানের ‘হিলাল-এ-ইমতিয়াজ’-এর জন্য মনোনীত হয়েছিলাম। এটি পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে ওই পুরস্কার নেওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু একই সময়ে বাংলাদেশ সরকারও আমার বাবা অধ্যাপক ওয়ারিস মীরকে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মৈত্রী সম্মাননা জানানোর জন্য মনোনীত করে। ঢাকায় যেদিন বাবার সম্মাননা দেওয়া হবে সেদিন পাকিস্তানেও আমার পদক নেওয়ার কথা। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, বাংলাদেশেই আসব। আমার বাবা ১৯৭১ সালে সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করেছিলেন। বাবার পক্ষে আমি তাঁর সম্মাননা নিলাম। আসমা জাহাঙ্গীর, সালিমা হাশমিসহ অন্যরাও সেদিন সম্মাননা গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু যখন আমরা পাকিস্তানে ফিরে যাই তখন আমি কিছু লেখক ও টেলিভিশন উপস্থাপকের রোষানলে পড়ি। আমি কেন পাকিস্তানের বড় পুরস্কারের প্রতি অনীহা দেখিয়ে বাংলাদেশে এসেছিলাম- এটিই তাঁদের ক্ষোভের কারণ। তাঁরা রেগে গিয়েছিলেন। কেন আমি বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার দাবি করি? কেন আমি নৃশংসতায় জড়িত পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কিছু কর্মকর্তার বিচার দাবি করি?
সামাজিক গণমাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে হুমকি আসতে শুরু করে। বাংলাদেশের সম্মাননা নেওয়া অন্য পাকিস্তানিরা সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু টেলিভিশনের অনুষ্ঠানগুলোতে আমাকে সংঘবদ্ধ আক্রমণ করা হয়েছে। কারণ আমি অন্যদের তুলনায় বেশি জনপ্রিয় ছিলাম।
গত ১৯ এপ্রিল করাচিতে আমার ওপর হামলা হয়। ছয়টি গুলি আমার শরীরে লাগে। এখনো আমার শরীরে দুটি গুলি রয়ে গেছে। জামায়াতে ইসলামীর এক নেতা আমাকে হাসপাতালে দেখতে এসেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘মিস্টার মীর, আমরা জানি যে আপনি সব সময় রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর ভূমিকার বিরোধিতা করেছেন। আর আপনি সমর্থন করেছেন সাবেক স্বৈরশাসক মোশাররফের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিচারকে। তবে আপনি অবশ্যই মনে রাখবেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভূমিকার বিষয়ে আপত্তিকর কথা বলার কারণেই আপনার ওপর হামলা হয়েছে।’

কালের কণ্ঠ : বাংলাদেশিরা, বিশেষ করে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গর্ব করে। যুদ্ধ করে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে, কারো দানে বা দয়ায় হয়নি। পাকিস্তানিরা ১৯৭১ সালকে কিভাবে দেখে? ১৯৭১ সাল কি এখনো পাকিস্তানের জন্য বড় ইস্যু? আমার মনে হয়, আপনারা যাঁরা নৃশংসতা, গণহত্যার বিরোধিতা করেছিলেন তাঁরা চাননি যে পাকিস্তান ভেঙে আলাদা রাষ্ট্র হোক। এ ধারণা কি ঠিক?

হামিদ মীর : ১৯৭১ সাল পাকিস্তানে কোনো ইস্যু নয়। একাত্তরের বাস্তবতা জানেন এমন সুশিক্ষিত পাকিস্তানির সংখ্যা খুব কম। বাকিরা মনে করেন, ১৯৭১ সালে ভারত পাকিস্তানে আক্রমণ করে এবং বাংলাদেশ সৃষ্টি হয়। যখন আমরা তরুণ প্রজন্মকে সত্যটা শেখাতে চাই তখন ডানপন্থীরা আমাদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলেন।
আমরা মনে করি, ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সুস্পষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ আওয়ামী লীগের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল। পাঞ্জাবিদের অনেক আগেই বাঙালিরা ‘পাকিস্তান মুভমেন্ট’ শুরু করেছিল। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ যখন সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতান্ত্রিক অধিকারকে সম্মান দেখাতে অস্বীকৃতি জানাল তখন সংখ্যাগরিষ্ঠরা পাকিস্তানকেই বিদায় জানিয়ে দিল। ১৯৭১ সালে আমি স্কুলে যেতাম। আমার দুটি বিষয় ভালো মনে আছে। আমার মা-বাবা সামরিক অভিযানের বিরোধী ছিলেন। পাকিস্তান ভেঙে বাংলাদেশ হওয়ার পর তাঁদের মন খুব খারাপ ছিল। তবে তাঁরা আমাকে বলেছিলেন, বাঙালিরা বিশ্বাসঘাতক নয়।

কালের কণ্ঠ : ১৯৭১ সাল বাংলাদেশের জন্য বড় ইস্যু। বাংলাদেশ সরকার গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়ে আসছে। এ দাবি পূরণ করা পাকিস্তানের পক্ষে কতটা সম্ভব? ঐতিহাসিক ক্ষত কাটিয়ে উঠতে এটি কতটা সহায়ক হতে পারে?

হামিদ মীর : প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক চায়। ব্যক্তিগতভাবে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ মনে করেন, বাংলাদেশের কাছে দুঃখ প্রকাশে কোনো ক্ষতি নেই। রেলপথমন্ত্রী খাজা সাদ রফিক ও সরকারের আরেক মিত্র সিনেটর হাশিল বিজিনজু বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার বিষয়ে সংসদে আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু গত বছর আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের বিষয়টি তাঁদের জন্য কিছু সমস্যার সৃষ্টি করেছে। মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে সরকারকে বিবৃতি দিতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চাপ দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী চৌধুরী নিসার। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তাতে অস্বীকৃতি জানান। তথ্যমন্ত্রী পারভেজ রশিদ ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছিলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তান নাক গলাতে পারে না। কিন্তু জামায়াতে ইসলামীর দুজন সদস্য যখন কাদের মোল্লার সমর্থনে জাতীয় পরিষদে প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন তখন সরকারদলীয় সদস্যরা নীরব থাকলেন। আর এতেই প্রস্তাব গৃহীত হলো। প্রধানমন্ত্রী সেদিন জাতীয় পরিষদের অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে রায় হওয়ার পর সরকার এখন আবার চাপে পড়েছে।
নিসার আলী নিজামিকে সমর্থন করেছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চুপ থাকতে বলেছেন। কৌতূহলের বিষয় হলো, অন্যতম বিরোধী নেতা ইমরান খান বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে এই ইস্যুতে নীরব। এর কারণ হলো, খাইবার পাখতুন প্রদেশে তিনি জামায়াতে ইসলামী জোটের শরিক। নওয়াজ শরিফের সরকার টিকে গেলে তারা একদিন বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চাইবে বলে আমি আশা করি।

কালের কণ্ঠ : মুক্তিযুদ্ধ ও এর পরবর্তী সময়ে ভারতের ভূমিকাকে কিভাবে মূল্যায়ন করেন?

হামিদ মীর : ১৯৭১ সালে ভারত পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করতে পেরেছিল মুক্তিবাহিনীর জন্যই। কিন্তু ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি জেনারেলের আত্মসমর্পণ দলিল স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মুক্তিবাহিনীর প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। ভারতের সেনাবাহিনী এ ধারণাই দিতে চেষ্টা করেছে যে তারাই বাংলাদেশ সৃষ্টি করেছে। কিন্তু তা ঠিক নয়।

কালের কণ্ঠ : যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে আসা যাক। এ বিচার সম্পর্কে আপনার ব্যক্তিগত মত কী? পাকিস্তানিরাই বা একে কিভাবে দেখে?

হামিদ মীর : বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের ট্রাইব্যুনাল পাকিস্তানে বড় কোনো ইস্যু নয়। বড় সব দল এ বিষয়ে নীরব। কেবল আমাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর নেতারা এর বিরোধিতা করছেন।

কালের কণ্ঠ : হ্যাঁ, আপনাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে অনেক কথাই বলছেন। বাংলাদেশ এর প্রতিবাদও জানিয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার কি আপনারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় মনে করছেন না?

হামিদ মীর : পাকিস্তানের বেশির ভাগ মানুষই যুদ্ধাপরাধের বিচারকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবেই দেখে। দ্বিতীয়ত, আমরা ১৯৭৪ সালের ৯ এপ্রিল ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তিকে অগ্রাহ্য করতে পারি না। ভারতের কারাগারে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। ওই চুক্তির আওতায় ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাকে হস্তান্তরের দাবি প্রত্যাহার করতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ তাঁদের বিচার করতে চেয়েছিল। কিন্তু পাকিস্তান স্বীকৃতি দেওয়ায় বাংলাদেশ তার অবস্থান বদলায়।
বি জেড খসরুর ‘দ্য বাংলাদেশ মিলিটারি ক্যু অ্যান্ড দ্য সিআইএ লিংক’ বইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সরকারি নথির বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানকে সহযোগিতা করতে যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে ব্যবহার করেছে। ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার বিষয়ে নীতি বদলাতে ভারত বাংলাদেশকে চাপ দেয়। কারিগরিভাবে ১৯৭১ সালের সামরিক অভিযান চালিয়েছিলেন মূলত পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা। জামায়াতে ইসলামী কেবল তাঁদের সহযোগিতা করেছে।
অনেক পাকিস্তানিই প্রশ্ন করেন, যদি সেনা কর্মকর্তাদেরই বিচার না হয়, তবে কেবল জামায়াতে ইসলামীর কেন? তবে এটিও উল্লেখ করার মতো বিষয় যে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে জনমত সৃষ্টিতে জামায়াতে ইসলামী ব্যর্থ হয়েছে।

কালের কণ্ঠ : পাকিস্তান ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীকে ফিরিয়ে নিয়ে বিচার করেনি। এখন কিছু পাকিস্তানি রাজনীতিক এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তান- দুই দেশের জামায়াতই বলছে, ১৯৭১ সালের ঘটনাবলির সমাধান ১৯৭৪ সালেই হয়ে গেছে। আপনিও কি তাই মনে করেন?

হামিদ মীর : না। হামুদুর রহমান কমিশন ১৯৭১ সালে বাঙালিদের বিরুদ্ধে নৃশংসতা চালানো কিছু ব্যক্তিকে চিহ্নিত করেছে। পাকিস্তানে তাদের কারোরই বিচার হয়নি।

কালের কণ্ঠ : যুদ্ধাপরাধ, নৃশংসতার কথা তো পাকিস্তানি লেখকদের বইয়েও স্থান পেয়েছে।

হামিদ মীর : জেনারেল নিয়াজি ১৯৭১ সালে ধর্ষণকে উৎসাহিত করেছিলেন- এর সাক্ষ্য দিচ্ছে অবসরপ্রাপ্ত পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজার লেখা বই ‘অ্যা স্ট্র্যাঞ্জার ইন মাই ওউন কান্ট্রি’। এটি আমাদের জন্য লজ্জার। ওই বইয়ের তথ্য নিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কখনো ভিন্নমত পোষণ করেনি। আসলে ওই বইটি শর্মিলা বোসের মুখে চপেটাঘাতের শামিল। আরেকটি বই, মেজর জেনারেল আবু বকর উসামা মিথার লেখা ‘ফ্রম বোম্বে টু জিএইচকিউ’তে ১৯৭১ সালে নৃশংসতার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। পাকিস্তানিদের লেখা এসব বই খুনি ও ধর্ষকদের বিরুদ্ধে ইতিহাসের বিচার হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

কালের কণ্ঠ : সাম্প্রতিক সময়ে আপনার বিরুদ্ধে পাকিস্তানে ঘৃণ্য অপপ্রচার শুরু হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বাংলাদেশের টেলিভিশনের সঙ্গে আপনার কথোপকথনকে ভারতীয় টেলিভিশনের সঙ্গে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কথোপকথন বলে নতুন মাত্রা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর কারণ কি শুধুই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আপনার অবস্থান?

হামিদ মীর : গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে প্রকাশ্যে ও গোপনে যোগাযোগ আছে এমন কিছু পাকিস্তানি সাংবাদিক ও টেলিভিশন উপস্থাপক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করছেন। গত বছর বাংলাদেশের একটি টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি ভিডিও ক্লিপ তাঁরা ব্যবহার করছেন। অথচ ওই মিথ্যাবাদীরা দাবি করছেন যে আমি ভারতের কিছু টিভি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছি।
এআরওয়াই চ্যানেলের টিভি উপস্থাপক মুবাশির লুকমানসহ এসব ব্যক্তি বলছেন, হামিদ মীর ভারতের হয়ে কাজ করেন। আসলে তাঁরা আমাকে ঘৃণা করেন। কারণ আমি সব সময়ই গণতন্ত্রের সমর্থক ছিলাম। ওই মুবাশির লুকমান ২০০৭ সালে সাবেক স্বৈরশাসক মোশাররফের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী হয়েছিলেন। কয়েক সপ্তাহ আগে তাঁর সরাসরি সম্প্রচারিত আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি প্রকাশ্যেই সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা গ্রহণ করতে বলেছিলেন। তিনি বিচারকদের ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করেছিলেন এবং বর্তমানে আদালত অবমাননার অভিযোগ মোকাবিলা করছেন। আমি এমন কিছু শক্তির নিশানায় পরিণত হয়েছি যারা চায়, সেনাবাহিনী পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি করুক। আমি প্রকাশ্যেই এর বিরোধিতা করছি। কারণ আমি মনে করি, আরেকটি সামরিক অভ্যুত্থান পাকিস্তানের অবশিষ্ট অংশকেও ভাঙবে।

কালের কণ্ঠ : বন্ধু হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা ও চ্যালেঞ্জগুলো কিভাবে দেখেন?

হামিদ মীর : বাংলাদেশ অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে একই সঙ্গে আমি মনে করি, সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রবাদ বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত- সবার জন্যই অভিন্ন সমস্যা হয়ে উঠছে। উগ্রবাদকে পরাজিত করতে দক্ষিণ এশিয়ার সব দেশকে অবশ্যই হাত মেলাতে হবে। আমাদের শান্তির শত্রুদের পরাজিত করতে অবশ্যই যৌথ কৌশল নিয়ে অগ্রসর হতে হবে।

কালের কণ্ঠ : আপনাকে ধন্যবাদ।

হামিদ মীর : কালের কণ্ঠ ও তার পাঠকদেরও ধন্যবাদ।

Saturday, September 6, 2014

চিকিৎসক হতে চাও?

চিকিৎসক হতে চাও?

আমি নতুনদের বলব ‘থিঙ্ক পজিটিভ’। হবে না, পারব না—এ ধরনের কথাবার্তা ভুলে যাও। সব সময় মনে করবে, আমি পারবোই।
মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় ১০০টি এমসিকিউ প্রশ্নের জন্য বরাদ্দ থাকে ১০০ নম্বর। এর মধ্যে জীববিজ্ঞান (প্রাণী+উদ্ভিদ)=৩০, রসায়ন (১ম + ২য়)=২৫, পদার্থবিজ্ঞান (১ম + ২য়)=২০, ইংরেজি=১৫, সাধারণ জ্ঞান=১০। এখানে নম্বর বণ্টন দেখেই বোঝা যাচ্ছে, জীববিজ্ঞান এবং রসায়নের গুরুত্ব বেশি। চলো, প্রতিটি বিষয়ে একটা ধারণা দেওয়া যাক।
আনিকা তাহসিন

জীববিজ্ঞান

প্রাণিবিজ্ঞান বই থেকেই বেশির ভাগ প্রশ্ন করা হয়। বিশেষ করে মানবদেহ অধ্যায়। তাই মানবদেহের খুঁটিনাটি তথ্যগুলো ভালোভাবে ঝালিয়ে নাও। পরিষ্কার ধারণা থাকতে হবে প্রতিটি তন্ত্র ও প্রক্রিয়াগুলোর ওপর। উদ্ভিদবিজ্ঞানের জন্য উদ্ভিদের ভিন্নতা, জৈবনিক প্রক্রিয়া এই বিষয়গুলো থেকেও বিগত বছরগুলোয় অনেক প্রশ্ন আসতে দেখা গেছে। কোন বিজ্ঞানী কোন মতবাদের জন্য বিখ্যাত, কোন সূত্রটি কত সালে আবিষ্কৃত হয়েছে, এসব তথ্য নখদর্পণে থাকতে হবে। তবে ভর্তি পরীক্ষার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সংজ্ঞা, বইয়ের সব ছক বৈশিষ্ট্য, পার্থক্য—এই অংশগুলো থেকেও প্রশ্ন আসার সম্ভাবনা বেশি।

রসায়ন

রসায়ন দ্বিতীয় পত্র থেকে প্রশ্ন করা হয় বেশি। যেসব বিক্রিয়া বিজ্ঞানের নামে নামাঙ্কিত, সেসব বিক্রিয়া ও তার আবিষ্কারের সাল খেয়াল রেখো। সবচেয়ে গুরুত্ব দাও মৌলের পর্যাবৃত্ত ধর্ম, ডি-ব্লক মৌল, জৈব অ্যাসিড, হাইড্রোকার্বন ইত্যাদি বিষয়ে। রাসায়নিক বন্ধন, তড়িৎ রাসায়নিক কোষ, অ্যালডিহাইড ইত্যাদি বিষয়ে বিশেষ নজর দাও।

পদার্থবিজ্ঞান

পদার্থবিজ্ঞানে যেসব সূত্র খুব বেশি পরিচিত, আবার যেসব সূত্র ব্যবহার করে সহজে ছোট অঙ্ক কষা যায়, সেসব প্রশ্নই দেওয়া হয়। যেহেতু পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর নিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই, তাই এ জাতীয় প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর মনে রাখার বিকল্প নেই। সঙ্গে সঙ্গে পার্থক্য, একক মান ইত্যাদি যত ছক আছে, ভালোভাবে মনে রেখো।

ইংরেজি


Vocabulary-তে যে যত ভালো, এই অংশে নম্বর ওঠানোর সুযোগও বেশি। তাহলে Synonym-Antonym নিয়ে তেমন বেগ পেতে হবে। Right Form of Verb, Tense, Parts of speech থেকে প্রতিবছরই প্রশ্ন করা হয়। Narration, Voice, Phrase and Idioms, Preposition নিয়ে একটু বাড়তি মনোযোগ দাও।

সাধারণ জ্ঞান

বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ঘটে যাওয়া আলোচিত ঘটনাগুলো সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখার জন্য দৈনিক পত্রিকাগুলোয় প্রতিদিন চোখ বোলাও। এ ছাড়া ক্ষুদ্রতম, বৃহত্তম, প্রথম ও একমাত্র—এ ধরনের বিষয়গুলোর প্রতি গুরুত্ব দাও। বিসিএস পরীক্ষার গত কয়েক বছরের প্রশ্নগুলো সমাধান করলে তা কাজে দেবে।

জরুরি কিছু কথা

কখনোই পড়োনি, এমন কিছু নতুন করে এখন আর পড়তে যেয়ো না। এতে সময় নষ্ট হয় বেশি। কিন্তু বিগত বছরগুলোয় বারবার এসেছে, এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাদ দিয়ে থাকলে, সেগুলো আয়ত্ত করে ফেলাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। সেই সঙ্গে পড়া বিষয়গুলোও বারবার দেখো। কারণ, অস্পষ্ট ধারণা নিয়ে পরীক্ষার হলে গেলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
নিশ্চয়ই তোমাদের জানা আছে, একটা ভুলের জন্য ০.২৫ নম্বর করে কাটা যাবে। অর্থাৎ চারটি ভুল উত্তরের জন্য তুমি হারাচ্ছ একটি সঠিক উত্তরের নম্বর।
এ জন্য পরীক্ষার হলে একটু কৌশলী হতে হবে। প্রথম ২৫ মিনিটে নিশ্চতভাবে জানা ৫০-৬০টি উত্তর দাগিয়ে নিতে পারো। পরের ২০ মিনিটে মোটামুটি সহজ, এ রকম ২০-৩০টি উত্তর দাগিয়ে ফেলতে পারলে ভালো হয়। ৭০-৮০টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে ফেললে চিন্তামুক্ত লাগবে। এরপর ‘উত্তর এমন হতে পারে, কিন্তু মনে পড়ছে না’, এ রকম প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করার সময় পাবে। কোনো প্রশ্নের পেছনে অযথা অতিরিক্ত সময় নষ্ট করার কোনো মানে নেই। দ্রুত পরের প্রশ্নে চলে যাবে।
অনেকেই জিজ্ঞাসা করে থাকে, প্রস্তুতির জন্য দিনে কত ঘণ্টা পড়া উচিত। আমি বলব, যতক্ষণ পর্যন্ত কোনো বিষয় সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না হয়, ততক্ষণ পড়া উচিত।
ভালো প্রস্তুতি নাও, ভালো পরীক্ষা দাও। সবার জন্য শুভকামনা।

মেডিকেলের ভুবনে স্বাগতম

ডা. মো. ইসমাইল খান
অধ্যক্ষ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ
বাংলাদেশে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা হয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে, সারা দেশে একই সঙ্গে। একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষা যেখানেই দিক না কেন, মেধাস্কোরের ভিত্তিতে সে সুযোগ পেতে পারে যেকোনো মেডিকেল কলেজে। মেধাভিত্তিক এ বাছাই পরীক্ষার মধ্য দিয়েই শুরু হয় চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নপূরণের যাত্রা। চিকিৎসা পেশা এক মহান পেশা। চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করার আগে সবাইকেই কিছু নিয়ম মেনে চলার শপথ নিতে হয়। সত্যিকার অর্থে মানবতার সেবার ব্রত নিজের মধ্যে থাকতে হবে।
মা-বাবার চাপে পড়ে এ পেশায় না আসাই ভালো। যে বয়সে একজন শিক্ষার্থী মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়, সে বয়সে তার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হয়ে যায়। তাই অভিভাবকদেরও বলছি, আপনার সন্তানের যদি চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছে না থাকে, তাহলে তাকে চিকিৎসক হওয়ার জন্য চাপ দেবেন না। চিকিৎসকের পেশাকে ভালোবেসে যারা এ পথে হাঁটতে চায়, তাদের জন্য রইল শুভকামনা।।
 সূত্র - আনিকা তাহসিন , দৈনিক প্রথম আলো

Tuesday, August 19, 2014

রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র’। ‘সরকারের মধ্যে সরকার’


সমান্তরাল সরকার!

এমপি কামাল মজুমদারের 'ব্যক্তিগত আদালত' ও উন্নয়ন কমিটি

এ যেন ‘রাষ্ট্রের মধ্যে রাষ্ট্র’।সরকারের মধ্যে সরকার’। 

বলা যায়, ‘সমান্তরাল সরকার’। 

আর এ ধরনের সরকার পরিচালনা করছেন খোদ রাজধানীতেই একজন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য। ঢাকা-১৫ আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার তাঁর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ‘উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি’ গঠন করে রীতিমতো নির্বাহী বা প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা শুরু করেছেন। তাঁর নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি সরকারি কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়ে তিনি এ কমিটির কথা জানান দিয়েছেন এবং মৌখিক বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন, যেন তারা যেকোনো দাপ্তরিক কাজ করার আগে এমপি গঠিত কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ ছাড়া এর আগে থেকেই হুবহু আদালতের আদলে ‘সামাজিক বিচার কমিটি’ গঠন করে নিজের এলাকায় রীতিমতো বিচারকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এমপি কামাল মজুমদার। এখানে মামলার আদলে অভিযোগ দায়ের করা হয়, সেটার তদন্ত হয়, শুনানি চলে, সাক্ষ্যগ্রহণ হয়, এরপর লিখিতভাবে রায়ও ঘোষণা হয়। অনেক ক্ষেত্রে রায় কার্যকরও করা হয়। আওয়ামী লীগের আগের আমলে তাঁর এই ‘আদালতে’ প্রধান বিচারপতি পদও ছিল। তবে সংশ্লিষ্ট সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এর বিরুদ্ধে উকিল নোটিশ পাঠালে ওই পদ বাদ দেওয়া হয়, তবে বিচারক পদ থেকে যায়। এখন অবশ্য বিচার কমিটিতে একজন আহ্বায়ক, একজন সদস্যসচিব ও তিনজন সদস্য রয়েছেন। একজন বেতনভুক্ত পেশকারও রয়েছেন। তাঁরাই কথিত আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

সংবিধান বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আইন সভা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগ- রাষ্ট্রের এ তিনটি স্তম্ভের মধ্যে আইন সভা তথা সংসদের ক্ষমতা রয়েছে আইন প্রণয়নের। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী এককভাবে কোনো সংসদ সদস্যের সেই ক্ষমতা নেই; আইন প্রয়োগ, বিচার করা বা নির্বাহী কাজের ক্ষমতা তো নেই-ই। কেউ তা করতে গেলে সেটা হবে বেআইনি ও অবৈধ।
বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ব্যারিস্টার রফিক-উল হক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ ধরনের কর্মকাণ্ড দেশের প্রচলিত আইনবিরোধী। স্থানীয় এমপির এমন নিজস্ব বিচারব্যবস্থা বন্ধ না করলে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হবে; আবার সাধারণ মানুষের মধ্যেও ভীতি সৃষ্টি হবে।’
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাজধানীর মিরপুর, কাফরুল ও ভাসানটেক এলাকায় গত পাঁচ বছরে এমপি কামাল মজুমদারের কথিত আদালতে ২৫৩টি অভিযোগ আমলে নিয়ে ২৩০টির রায় ঘোষণা করা হয়েছে। বাকি ‘কেসগুলোর’ শুনানি চলছে। বিচারকাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের। এ আদালতের সমন পেয়ে হাজির না হলে কথিত অভিযুক্তের বিরুদ্ধে নেওয়া হয় পদক্ষেপ। অনেক ক্ষেত্রে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতেই রায় ঘোষণা করা হয়। এমনকি জমিজমা-সংক্রান্ত কোনো ‘মামলা’য় যে পক্ষ জয় পায় তাদের জমিজমা এই ‘আদালতের’ পক্ষে দখল করে দেওয়া হয়েছে- এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। প্রচলিত আদালতের মতো কোনো মামলায় হারলে এখানে রিভিউ আবেদনও করা যায়।
জানা যায়, ১৯৯৬ সালে এ আদালতের প্রধানকে বলা হতো ‘প্রধান বিচারপতি’। পরে এক সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির উকিল নোটিশের পর এ উপাধি বাতিল করা হয়েছে। এ আদালতে রয়েছেন একজন পেশকারও (বেঞ্চ সহকারী)।
এমপির বিচার কমিটির মাধ্যমে জমিজমা, বাড়িঘর ও অর্থসংক্রান্ত অভিযোগের সমাধান করা হয়। কোনো অভিযোগ পেলেই সমন দিয়ে অভিযুক্তকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বিচার কমিটির পক্ষ থেকে। এ নির্দেশ না মানলে বিচার কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অমান্যকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
কামাল আহমেদ মজুমদারের বিচার কমিটিতে শীর্ষ সন্ত্রাসী কিলার আব্বাসের ভাই সন্ত্রাসী জিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ কমিটির লোকজন বিচারের নামে চাঁদাবাজির সময় হাতেনাতে গ্রেপ্তারও হয়েছেন। সব মিলিয়ে মিরপুর, কাফরুল ও ভাসানটেকে এমপির বিচার কমিটির অত্যাচারে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। কিন্তু কামাল মজুমদারের ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।
বিচার কমিটি গঠনের সত্যতা স্বীকার করে ঢাকা-১৫ আসনের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকায় পাঁচটি ওয়ার্ড নিয়ে বিচার কমিটি গঠন করে দিয়েছি। তারা আইনগত দিক দেখে বিচারকাজ পরিচালনা করে থাকে। আমার কাছে মানুষ এলে তাদের বিচার কমিটিতে পাঠিয়ে দিই। আমি নিজে বিচার করলে বদনাম হবে। এমপি ইলিয়াস মোল্লা ও আসলামুল হক নিজেই বিচার করেন। আমার পাঁচ ওয়ার্ডের বিচারকাজ পরিচালনা হয় মোহনা টিভির কার্যালয়ে। এ কমিটির রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনের ব্যবস্থাও রয়েছে।’ এমপি দাবি করেন, ‘তাঁর বিচার কমিটির রায় প্রচলিত আদালতও আমলে নেন।’
উল্লেখ্য, মোহনা টিভি সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান।
বিচার কমিটির সদস্যসচিব আবুল খায়ের ভূঁইয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, “এ আদালতের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম ক্ষমতায় আসার পর। সেই সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সামসুদ্দিন মোল্লাকে প্রধান ও আব্দুল করিম আকন্দকে সদস্যসচিব করে সাত সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির প্রধানকে ‘প্রধান বিচারপতি’ আর অন্য সদস্যদের বলা হতো বিচারপতি। একটি কেসের রায়ের কপিতে প্রধান বিচারপতি লেখার পর সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি এমপি মহোদয়কে উকিল নোটিশ পাঠায়। এরপর আমরা তা পরিবর্তন করে আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব নাম দিয়েছি। কিন্তু আমাদের কার্যক্রম পুরোটাই আদালতের মতোই পরিচালিত হয়ে থাকে। আমাদের রয়েছে একটি বেঞ্চ সহকারী বা পেশকার। তাঁর নাম ওয়াজি উল্লাহ। বাদীর টাকায় তাঁর বেতন দেওয়া হয়। কারো কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায়ের কোনো নজির নেই।”
আদালত পরিচালনার ক্ষেত্রে আপনাদের ‘বিচারিক ক্ষমতা’ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্যের বিচারিক ক্ষমতা রয়েছে। তাঁর দেওয়া ক্ষমতাবলেই আমরা আদালত পরিচালনা করে থাকি।’
জানা যায়, এ কমিটির আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব সদস্যসচিব আবুল খায়ের ভূঁইয়া এবং সদস্য আব্দুল আলী চৌধুরী, এম এ গফুর ও সিরাজউদ্দিন।
এলাকাবাসীর দাবি, কামাল মজুমদার ও তাঁর অনুসারীদের গঠিত এ বিচার কমিটির নামে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা এবং নির্বাহী ক্ষমতা আরোপের জন্য গঠিত আরেক কমিটির কারণে ইতিমধ্যে এলাকায় গণভীতি তৈরি হয়েছে। এমপির এই ‘মিনি আদালতের’  বিচারকাজের নজির এখানে তুলে ধরা হলো।
ঘটনা-১ : গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বোটানিক্যাল গার্ডেনের সাবেক পরিচালক এ বি এম বারেকের স্ত্রী লুৎফুন নেসা নাহারকে সামাজিক বিচার কমিটির পক্ষে একটি সমন (নোটিশ) দেন আহ্বায়ক আব্দুল ওহাব। সমনে বলা হয়, ‘জনাব আলহাজ শফিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেশ করেছেন। এ অভিযোগ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আপনাকে বিচার কমিটির কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, প্রমাণাদি ও সাক্ষীসহ উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হলো।’
সমনে উল্লেখ আছে, ঢাকা-১৫ আসনের এমপি কামাল আহমেদ মজুমদার কর্তৃক গঠিত সামাজিক বিচার কমিটির কার্যালয় মোহনা, প্লট-৮, রোড-৪, মিরপুর-৭। কিন্তু বিচার কমিটির সমনে সাড়া না দেওয়ায় নাহারকে আরো চারটি সমন দেওয়া হয়।
জানা যায়, শফিউদ্দিন গত ৬ ফেব্রুয়ারি কামাল মজুমদারের কাছে একটি আবেদন করেন। এ আবেদনের ওপর কামাল মজুমদার বিচার কমিটিকে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি ও তাঁকে অবগত করার নির্দেশ দেন।
এ বি এম বারেক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘২০ বছর আগে নির্মাণ করা আমার বাড়ির দেয়াল ভেঙে এক প্রতিবেশীকে রাস্তা দেওয়ার অজুহাতে বিচার কমিটি নোটিশ দেয়। আমি বিজ্ঞ আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি, স্বঘোষিত এ কমিটি আমাকে দালিলিক প্রমাণাদি নিয়ে হাজির হওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছে তার কোনো এখতিয়ার  তাদের নেই। এটা বেআইনি নোটিশ। পরে আমি তাদের নির্দেশ না মানায় পরপর পাঁচটি নোটিশ দেয়। এরপর বিচার কমিটির লোকজন দলবল নিয়ে আমার দেয়াল ভাঙতে আসে। বাধ্য হয়ে আমি পুলিশের আশ্রয় নেই। পুলিশের সহয়তায় আমার রক্ষা হয়।’
এ ব্যাপারে বিচার কমিটির সদস্যসচিব আবুল খায়ের ভূঁইয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এমপি সাহেবের নির্দেশে আমরা এ কমিটি করেছি। কমিটির কাছে কেউ অভিযোগ করলে তদন্ত করে দেখা হয়। এ জন্য আমরা উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশ দিই। বোটানিক্যাল গার্ডেনের সাবেক পরিচালকের স্ত্রীকেও আমরা পাঁচটি নোটিশ দিয়েছি। কিন্তু তিনি এতে সাড়া দেননি। এর পরও আমরা স্থানীয় লোকজনের সমন্বয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করেছি এবং সব প্রমাণাদি পর্যালোচনা করে তাঁর অনুপস্থিতিতেই রায় দিয়েছি। এ বি এম বারেক ছাড়া এ পর্যন্ত আমাদের রায়ের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।’
ঘটনা-২ : বিচার কমিটির পক্ষ থেকে উসমান গণি নামের এক ব্যক্তিকে চিঠি দেওয়া হয়। তিনি চিঠির বিষয়ে সাড়া না দিলে কমিটির পক্ষ থেকে রায় দিয়ে তা কার্যকর করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। গত ১৬ জুন মিরপুর থানার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সামাজিক বিচার কমিটির আহ্বায়কের নেতৃত্বে শতাধিক লোকজন গিয়ে ৬০ ফুট প্রশস্ত রাস্তার পাশে উসমান গণি তালুকদারের মালিকানাধীন জমির সীমানাপ্রাচীর ভেঙে দেয়। এরপর পুলিশের সহায়তায় তাঁর জায়গা রক্ষা পায়। জানা যায়, উসমান গণি তালুকদার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান।
উসমান গণি তালুকদার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিচার কমিটির নামে তারা আমাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দিয়ে হাজির হতে নোটিশ দেয়। এখতিয়ারবহির্ভূতভাবে জারি করা এ নোটিশে আমি সাড়া দেইনি। পরে বিচার কমিটির লোকজন দলবল নিয়ে এসে বেআইনিভাবে আমার সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ফেলে। অবশেষে স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় তাদের হাত থেকে রক্ষা পাই।’
এমপির তৃণমূল প্রশাসন : সংসদ সদস্য কামাল মজুমদার তাঁর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে কমিটি গঠন করেছেন, যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি।’ গত কয়েক মাসের ব্যবধানে সব কয়টি ওয়ার্ডেই এ কমিটি গঠন করেছেন তিনি। কমিটি গঠনের পর চিঠি পাঠিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অফিস আদেশ দিয়েছেন তাঁর এলাকার সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী প্রকৌশলী, ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী, ডেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী, তিতাসের উপমহাব্যবস্থাপক ও থানার ওসিদের। চিঠিতে বলা হয়েছে, এলাকার রাস্তা-ঘাট, বিদ্যুৎ, পানির লাইন, গ্যাসের লাইনসহ সব ধরনের নাগরিক সুবিধার কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব এমপির কমিটির।
চিঠি থেকে জানা যায়, ৪ নম্বর ওয়ার্ড উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মতিউর রহমান মাইকেল, সদস্যসচিব মোফাজ্জল হোসেন, সদস্য শওকত হোসেন, আবু বকর ছিদ্দিক ও তাজুল ইসলাম। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ কমিটির আহ্বায়ক রেজাউল হক ভূঁইয়া বাহার, সদস্যসচিব মইজউদ্দিন, সদস্য করিমুল হক চৌধুরী মিঠু, তাজুল ইসলাম, শফিকুর রহমান, আবু জালাল, ফারুক আহমেদ, ফখরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও খোকা মিয়া। ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে আহ্বায়ক এম এ গফুর, সদস্যসচিব ইসমাইল হোসেন, সদস্য আলাউদ্দিন, আজগর আলী, ইসহাক মিয়া, আজহারুল হক ফেরদৌস, মকবুল হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিল্লাল উদ্দিন আহমেদ আহ্বায়ক ও খান বাবলু সদস্যসচিব আর সদস্য আব্দুল আলী চৌধুরী, মোহাম্মদ জাফরুল্লাহ, আব্দুর রউফ আলী, জহিরুল ইসলাম খান, সৈয়দ আজিজুল হক খসরু, আব্দুর রব ও ইয়াছিন মিয়া।
গত ৯ এপ্রিল ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিটির অনুমোদনপত্রে কামাল মজুমদার স্বাক্ষর করে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী এলাকা ১৮৮, ঢাকা-১৫-এর কাফরুল থানাধীন রাস্তা-ঘাট উন্নয়ন, স্যুয়ারেজ লাইন উন্নয়ন, নিরবচ্ছিন্নভাবে পানি, বিদ্যুৎ, গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিতকরণ, শিক্ষা, সামাজিক উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষার লক্ষ্যে এ কমিটি গঠন করা হলো।’
১৪ নম্বর উন্নয়ন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির সদস্যসচিব মো. মইজউদ্দিন বলেন, ‘এমপি মহোদয়ের নির্দেশে আমরা জনগণের সুখ-শান্তি দেখার কাজ করছি। আমরা ওয়াসার সুয়্যারেজ লাইন নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে জমা দিয়েছি, তা এমপি মহোদয়ের মাধ্যমে ওয়াসায় পাঠানো হয়েছে। এ কাজ ওয়াসা আমাদের সঙ্গে সমন্বয় করে করবে। এভাবে জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতেই আমরা কাজ করে থাকি।’
কামাল মজুমদারের দেওয়া চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেন ঢাকা ওয়াসার মডস জোন-৪-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জুলফিকার আলী। কমিটির পক্ষ থেকে কোনো ধরনের কাজের চাপ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের এক আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, ‘এ ধরনের চিঠি পাওয়ার পর আমরা খুবই বিব্রত হয়েছি। একজন সংসদ সদস্যের সরকারি দপ্তরের ওপর আস্থা থাকলে তিনি এ কমিটি গঠন করতেন না। কমিটি গঠনই শেষ নয়। উনার নির্বাচনী এলাকায় সরকারি যেকোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করলে সংশ্লিষ্ট কমিটির সঙ্গে যোগাযোগ করারও মৌখিক নির্দেশনা রয়েছে।’
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এ ধরনের কমিটি গঠন করে সংসদ সদস্যের নেওয়া পদক্ষেপ সম্পূর্ণ বেআইনি।
সূত্র : তোফাজ্জল হোসেন রুবেল, দৈনিক কালের কন্ঠ।

Saturday, August 2, 2014

JSC & Junior Dhakhil Exam Rutine 2014 - নিন শেষ হবার আগে


Jsc 2014 Exam Rutine 

ফুরোনের আগেই নিয়ে নিন - জে.এস.সি ১৪ এর রুটিন 

অনেক দিন পর আবার এলাম - জে.এস.সি 2014 পরীক্ষার রুটিন নিয়ে। আগামী ২রা নভেম্বর ১৪ বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার মাধ্যমে শুরু হচ্ছে  জে.এস.সি ১৪ পরীক্ষা ৩রা নভেম্বর বাংলা ২য় পত্র, ৫ ও ৬ ই নভেম্বর ইংরেজী ১ম ও ২য় পত্র  এবং  শেষ হবে ১৮ ই নভেম্বর। 
এক নজরে দেখি সংক্ষিপ্ত রুটিন ঃ

তারিখ               বার               বিষয় ও পরীক্ষা শুরুর সময় 
                            সকাল ১০টা                বিকাল ২ টা

০২/১১/২০১৩   সোমবার        ১। বাংলা - ১ম পত্র
০৩/১১/২০১৩  মঙ্গলবার         ১। বাংলা - ২য় পত্র
০৫/১১/২০১৩   বুধবার         ১। ইংরেজি - ১ম পত্র
০৬/১১/২০১৩   বৃহঃবার         ১। ইংরেজি - ২য় পত্র
৯/১১/২০১৩   রবিবার        ১।  গনিত     বিজ্ঞান/ সাধারণ বিজ্ঞান
-----------------------------------------------

এভারে বাকিটা ডাউনলোড করে নিন, নীচের লিঙ্ক থেকে 

                                             

১৮/১১/২০১৩   মঙ্গল বার           বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিচয়

এছাড়াও সরাসরি নীচের লিঙ্ক থেকে জে.এস.সি ১৪ পরীক্ষার রুটিন  PDF ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারেন।

অনুরূপ, জুনিয়র দাখিল পরীক্ষা 2014 এর  রুটিন ও এই সাইট থেকে

 জুনিয়র দাখিল পরীক্ষা 2014 এর  রুটিন এর 

                     PDF ফাইল ডাউনলোড করে নিতে পারেন.

আপনাদের সকলের মঙ্গল কামনায় শেষ করছি।