ঢাকার টাস্কফোর্স ও স্বপ্নের পুত্রজায়া
রাজধানী ঢাকার নানা সমস্যার সমাধান এবং একটি সুদূরপ্রসারী মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করার জন্য একটি সমন্বয় কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে। ঢাকার দুই মেয়রও এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মেয়র হওয়ার পর তাঁরা এখন বুঝতে পেরেছেন, মেয়রের ক্ষমতা খুব সীমিত। হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া বেশির ভাগ কাজই তাঁদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সম্প্রতি ঢাকার দুই মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে রাজধানীর উন্নয়ন ও নাগরিক সমস্যার সমাধানে একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে এই টাস্কফোর্সের প্রধান করারও প্রস্তাব দেন দুই মেয়র। প্রধানমন্ত্রীও এই প্রস্তাবে নীতিগত সমর্থন দিয়েছেন বলে সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
আপাতদৃষ্টিতে অনেকের মনে হতে পারে, খুব ভালো প্রস্তাব ও উদ্যোগ। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হলে তাতে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ জন্যই দুই মেয়র এই প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁদের দুজনের লক্ষ্য একটাই: তাঁদের মেয়াদকালে যেন ঢাকার কিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
কিন্তু রাজধানী ঢাকার বৃহত্তর প্রেক্ষাপট থেকে দেখলে এই প্রস্তাবটি ভালো হয়নি। কারণ, এতে মেয়রের ক্ষমতায়ন হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শক্তিতে মেয়র শক্তিমান হবেন। এটা কৃত্রিম। আমরা চেয়েছিলাম, ঢাকার নির্বাচিত মেয়র আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী হোক। সব কাজে প্রধানমন্ত্রীর পদকে ব্যবহার করা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রী সব সরকারি কমিটি বা টাস্কফোর্সেরও ওপরে। প্রধানমন্ত্রীকে যদি একটি কমিটি বা টাস্কফোর্সের প্রধান করা হয়, এতে প্রধানমন্ত্রীর পদকে ছোট করা হয়। ম্যাচে জেতার জন্য কোচ বা ম্যানেজারকে মাঠে নামতে বলা যেমন মানানসই হয় না, এটাও অনেকটা সে রকম।
প্রধানমন্ত্রী যদি এই টাস্কফোর্সের প্রধান হতে রাজিও হন, তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেও সমন্বয়হীনতার সমস্যা রয়েছে। তারা কী দোষ করল? প্রধানমন্ত্রী তো চট্টগ্রামেরও প্রধানমন্ত্রী। তাহলে আমরা প্রস্তাব দেব: প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামেও একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হোক। তা কি উচিত হবে? কোনো কিছু প্রস্তাব করার সময় আমরা অতশত ভাবি না। আমরা চাই, আমাদের কাজ উদ্ধার হলেই হলো।
অনেক অদক্ষ মন্ত্রী, মেয়র, এমপি তাঁদের নিজ নিজ কাজ উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলেন। প্রধানমন্ত্রীকে কমিটির প্রধান করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং করেন। প্রধানমন্ত্রীকে সশরীরে কমিটিতে রাখা হলে তাঁর মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। প্রত্যেক বড় মাপের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি বা টাস্কফোর্সে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত তাঁর অফিসের একজন সচিবকে সদস্য রাখলেই তিনি প্রত্যেক কমিটির কাজের অগ্রগতি ও সমস্যা সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রীর অবহিত থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী যখন যেখানে প্রয়োজন, সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীকে সারা দেশের নানা উন্নয়ন প্রকল্প এভাবেই তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং করতে হয়।
আমাদের মতে, ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেশি মাথা ঘামাবেন। সে কাজেই তাঁর বেশি সময় দেওয়া উচিত। একাধিক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী, মেয়র, এমপি, বিভাগ, অধিদপ্তর এসব সমস্যার সমাধান করার জন্য রয়েছে। এতগুলো লোক মিলে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না কেন? যদি রাজধানী ঢাকার বা চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশ দরকার হয়, সংসদে কোনো নতুন আইন পাস করার দরকার হয়, সে ব্যাপারে মন্ত্রী বা মেয়র কিংবা এমপি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইতে পারেন। কাজ এগিয়ে নেওয়ার পথে যদি কোনো সরকারি গিঁট লেগে যায়, প্রধানমন্ত্রী সেই গিঁট খুলে দিতে পারেন। যাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন কমিটি বা টাস্কফোর্সের প্রধান করতে চান, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর পদটি ছোট করছেন।
দেশে একটা যুদ্ধ লাগলে, বড় আকারে বন্যা হলে, বড় আকারে ভূমিকম্প হলে, বড় আকারে দাঙ্গা হলে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেলে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্স হতে পারে। দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তখন একযোগে কাজ করতে হবে। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তবে সে ধরনের কাজ সাময়িক। তিন-চার মাসের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই ব্যতিক্রম।
রাজধানী ঢাকার সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নকাজে সমন্বয় করার জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করা দরকার। যেহেতু কাজগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত, সেহেতু একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সমন্বয় কমিটি হওয়া বাঞ্ছনীয়। মেয়র ও সব সেবা সংস্থার বিভাগীয় প্রধানেরা এর সদস্য হবেন। এই কমিটি যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়নে কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বাধা দিতে পারবে না—এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেবেন। আপাতত এই নির্দেশই যথেষ্ট। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। তাতেও কাজ হবে না? প্রতিটি মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বসতে হবে? প্রধানমন্ত্রী কি শুধু ঢাকার প্রধানমন্ত্রী?
রাজধানী ঢাকার প্রশাসন পরিচালনার জন্য কোনো একক ওÿ ক্ষমতাবান নেতৃত্ব নেই। তাই আমরা ‘নগর সরকার’র কথা বলেছিলাম। বড় দুটি রাজনৈতিক দল এখনো নগর সরকারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেনি। তাই নগর সরকারের লক্ষ্যে কোনো কাজ বা আইন প্রণয়নের কথা কোনো সরকারই চিন্তা করেনি। এখন যদি নিদেনপক্ষে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা যায়, তাহলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নগর সরকার বা ঢাকায় একক ও ক্ষমতাবান নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারবে।
আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উন্নয়নকাজে সমন্বয় করার জন্য একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চÿক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে দেবেন। এ জন্য বেশি সময়ক্ষেপণ করার প্রয়োজন নেই।
সম্প্রতি ঢাকার দুই মেয়র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে রাজধানীর উন্নয়ন ও নাগরিক সমস্যার সমাধানে একটি টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে এই টাস্কফোর্সের প্রধান করারও প্রস্তাব দেন দুই মেয়র। প্রধানমন্ত্রীও এই প্রস্তাবে নীতিগত সমর্থন দিয়েছেন বলে সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
আপাতদৃষ্টিতে অনেকের মনে হতে পারে, খুব ভালো প্রস্তাব ও উদ্যোগ। কারণ, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হলে তাতে ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। এ জন্যই দুই মেয়র এই প্রস্তাব দিয়েছেন। তাঁদের দুজনের লক্ষ্য একটাই: তাঁদের মেয়াদকালে যেন ঢাকার কিছু সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
কিন্তু রাজধানী ঢাকার বৃহত্তর প্রেক্ষাপট থেকে দেখলে এই প্রস্তাবটি ভালো হয়নি। কারণ, এতে মেয়রের ক্ষমতায়ন হবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শক্তিতে মেয়র শক্তিমান হবেন। এটা কৃত্রিম। আমরা চেয়েছিলাম, ঢাকার নির্বাচিত মেয়র আইনের মাধ্যমে শক্তিশালী হোক। সব কাজে প্রধানমন্ত্রীর পদকে ব্যবহার করা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রী সব সরকারি কমিটি বা টাস্কফোর্সেরও ওপরে। প্রধানমন্ত্রীকে যদি একটি কমিটি বা টাস্কফোর্সের প্রধান করা হয়, এতে প্রধানমন্ত্রীর পদকে ছোট করা হয়। ম্যাচে জেতার জন্য কোচ বা ম্যানেজারকে মাঠে নামতে বলা যেমন মানানসই হয় না, এটাও অনেকটা সে রকম।
প্রধানমন্ত্রী যদি এই টাস্কফোর্সের প্রধান হতে রাজিও হন, তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেও সমন্বয়হীনতার সমস্যা রয়েছে। তারা কী দোষ করল? প্রধানমন্ত্রী তো চট্টগ্রামেরও প্রধানমন্ত্রী। তাহলে আমরা প্রস্তাব দেব: প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে চট্টগ্রামেও একটা টাস্কফোর্স গঠন করা হোক। তা কি উচিত হবে? কোনো কিছু প্রস্তাব করার সময় আমরা অতশত ভাবি না। আমরা চাই, আমাদের কাজ উদ্ধার হলেই হলো।
অনেক অদক্ষ মন্ত্রী, মেয়র, এমপি তাঁদের নিজ নিজ কাজ উদ্ধারের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে তাঁদের কাজের সঙ্গে যুক্ত করে ফেলেন। প্রধানমন্ত্রীকে কমিটির প্রধান করেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং করেন। প্রধানমন্ত্রীকে সশরীরে কমিটিতে রাখা হলে তাঁর মূল্যবান সময় নষ্ট হবে। প্রত্যেক বড় মাপের আন্তমন্ত্রণালয় কমিটি বা টাস্কফোর্সে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত তাঁর অফিসের একজন সচিবকে সদস্য রাখলেই তিনি প্রত্যেক কমিটির কাজের অগ্রগতি ও সমস্যা সম্পর্কে অবহিত থাকতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রীর অবহিত থাকাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবের পরামর্শে প্রধানমন্ত্রী যখন যেখানে প্রয়োজন, সেখানে হস্তক্ষেপ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীকে সারা দেশের নানা উন্নয়ন প্রকল্প এভাবেই তত্ত্বাবধান ও মনিটরিং করতে হয়।
আমাদের মতে, ভবিষ্যৎ উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেশি মাথা ঘামাবেন। সে কাজেই তাঁর বেশি সময় দেওয়া উচিত। একাধিক মন্ত্রণালয়, মন্ত্রী, মেয়র, এমপি, বিভাগ, অধিদপ্তর এসব সমস্যার সমাধান করার জন্য রয়েছে। এতগুলো লোক মিলে সমস্যার সমাধান করতে পারবেন না কেন? যদি রাজধানী ঢাকার বা চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর কোনো নির্দেশ দরকার হয়, সংসদে কোনো নতুন আইন পাস করার দরকার হয়, সে ব্যাপারে মন্ত্রী বা মেয়র কিংবা এমপি প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চাইতে পারেন। কাজ এগিয়ে নেওয়ার পথে যদি কোনো সরকারি গিঁট লেগে যায়, প্রধানমন্ত্রী সেই গিঁট খুলে দিতে পারেন। যাঁরা প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন কমিটি বা টাস্কফোর্সের প্রধান করতে চান, তাঁরা প্রধানমন্ত্রীর পদটি ছোট করছেন।
দেশে একটা যুদ্ধ লাগলে, বড় আকারে বন্যা হলে, বড় আকারে ভূমিকম্প হলে, বড় আকারে দাঙ্গা হলে, হাজার হাজার মানুষ মারা গেলে অবশ্যই প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে টাস্কফোর্স হতে পারে। দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানকে তখন একযোগে কাজ করতে হবে। দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। তবে সে ধরনের কাজ সাময়িক। তিন-চার মাসের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে চলে আসবে। এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই ব্যতিক্রম।
রাজধানী ঢাকার সমস্যা সমাধান ও উন্নয়নকাজে সমন্বয় করার জন্য একটি স্থায়ী ব্যবস্থা করা দরকার। যেহেতু কাজগুলো বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যুক্ত, সেহেতু একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে এই সমন্বয় কমিটি হওয়া বাঞ্ছনীয়। মেয়র ও সব সেবা সংস্থার বিভাগীয় প্রধানেরা এর সদস্য হবেন। এই কমিটি যা সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়নে কোনো মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বাধা দিতে পারবে না—এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেবেন। আপাতত এই নির্দেশই যথেষ্ট। এই কমিটিতে প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিনিধিত্ব করবেন তাঁর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা। তাতেও কাজ হবে না? প্রতিটি মিটিংয়ে প্রধানমন্ত্রীকে বসতে হবে? প্রধানমন্ত্রী কি শুধু ঢাকার প্রধানমন্ত্রী?
রাজধানী ঢাকার প্রশাসন পরিচালনার জন্য কোনো একক ওÿ ক্ষমতাবান নেতৃত্ব নেই। তাই আমরা ‘নগর সরকার’র কথা বলেছিলাম। বড় দুটি রাজনৈতিক দল এখনো নগর সরকারের প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করেনি। তাই নগর সরকারের লক্ষ্যে কোনো কাজ বা আইন প্রণয়নের কথা কোনো সরকারই চিন্তা করেনি। এখন যদি নিদেনপক্ষে একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা যায়, তাহলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নগর সরকার বা ঢাকায় একক ও ক্ষমতাবান নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে পারবে।
আমরা আশা করব, প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উন্নয়নকাজে সমন্বয় করার জন্য একজন মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি উচ্চÿক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করে দেবেন। এ জন্য বেশি সময়ক্ষেপণ করার প্রয়োজন নেই।
সচিবালয় স্থানান্তর?
একটা কথা শোনা যাচ্ছে, ঢাকার তোপখানা রোড থেকে সচিবালয় শেরেবাংলা নগরে শিল্প প্রদর্শনীর মাঠে স্থানান্তর করা হবে। যেহেতু এখন পূর্বাচলে চীন সরকার স্থায়ী ‘প্রদর্শনী হল’ নির্মাণ করে দিচ্ছে, কাজেই এই জায়গাটি খালি হয়ে যাবে। শেরেবাংলা নগরে এই জায়গাতে নতুন সচিবালয় নির্মাণ করার ব্যাপারে সরকারের নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমরা জানি না।
আমাদের ধারণা, এ রকম সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা ঠিক হবে না। শেরেবাংলা নগর এখন আর অত বড় ভবন করার উপযুক্ত নয়। এত গাড়ি, এত রকম যানবাহন, এত মানুষের চলাচলও ঠিক হবে না। সচিবালয় অনেক বড় একটি অবকাঠামো।
এ ব্যাপারে আমাদের কয়েকটি পরামর্শ রয়েছে। ১. রাজধানীর সচিবালয়, মন্ত্রী পাড়া, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবন, সেনানিবাস একবিংশ শতাব্দীর ঢাকার কোথায় নির্মাণ করা উচিত হবে, তা নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, নগর বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। ২. অ্যাডহক ভিত্তিতে এসব কাজ করা ঠিক নয়। যা করা হবে তা অন্তত ৫০-৭৫ বছরের ঢাকাকে (নির্মাণের পর) সামনে রেখে পরিকল্পনা করা উচিত। ৩. ঢাকার নতুন ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের মধ্যে সচিবালয়সহ বিভিন্ন বড় সরকারি ভবন চিহ্নিত করা যেতে পারে। ৪. কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ার মতো ঢাকা শহরের বাইরে (পূর্বাচল?) বিভিন্ন সরকারি ভবনের একটি পৃথক উপশহর নির্মাণের কথাও চিন্তা করা যায়। পুত্রজায়া আমাদের সামনে একটি বড় দৃষ্টান্ত।
এসব কাজ কখন শুরু হবে বা শেষ হবে, তা বড় কথা নয়। এ ধরনের কাজ আমাদের করতে হবে—এখন থেকে এই ভাবনা শুরু করা উচিত। কারণ, আমাদের জমির পরিমাণ সীমিত। কৃষিজমি আরও সীমিত। এসব কাজে অনেকগুলো ধাপ থাকে। কোনো একটি সরকার সব কাজ করার সুযোগ পায় না। বর্তমান সরকারের আমলে অন্তত এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া যায় কি না, তার চেষ্টা করা উচিত। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করি। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সরকার, সংসদের বিরোধী দল, অন্যান্য বড় রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি—সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা যেতে পারে। এতে এই বড় মাপের সিদ্ধান্তে সবার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। তার মূল্য কম নয়। পরের টার্মে যদি বর্তমান ক্ষমতাসীন দলই নির্বাচিত হয়, তাহলে তারা আরও পাঁচ বছর কাজ এগিয়ে নিতে পারবে। এ ধরনের বড় প্রকল্প ১৫-২০ বছরের আগে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।
আমরা আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করবে। অন্তত নির্দিষ্ট এজেন্ডা দিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে প্রাথমিক ও খসড়া রূপরেখা তৈরির দায়িত্ব দেবে। প্রাথমিক কাজ হিসেবে সেটাও কম নয়। মনে রাখা দরকার, আমাদের জন্য এই ভাবনা আর কেউ ভাববেন না। আমাদেরই ভাবতে হবে।
মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর: মিডিয়া ও উন্নয়নকর্মী।
একটা কথা শোনা যাচ্ছে, ঢাকার তোপখানা রোড থেকে সচিবালয় শেরেবাংলা নগরে শিল্প প্রদর্শনীর মাঠে স্থানান্তর করা হবে। যেহেতু এখন পূর্বাচলে চীন সরকার স্থায়ী ‘প্রদর্শনী হল’ নির্মাণ করে দিচ্ছে, কাজেই এই জায়গাটি খালি হয়ে যাবে। শেরেবাংলা নগরে এই জায়গাতে নতুন সচিবালয় নির্মাণ করার ব্যাপারে সরকারের নিশ্চিত কোনো সিদ্ধান্তের কথা আমরা জানি না।
আমাদের ধারণা, এ রকম সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে তা ঠিক হবে না। শেরেবাংলা নগর এখন আর অত বড় ভবন করার উপযুক্ত নয়। এত গাড়ি, এত রকম যানবাহন, এত মানুষের চলাচলও ঠিক হবে না। সচিবালয় অনেক বড় একটি অবকাঠামো।
এ ব্যাপারে আমাদের কয়েকটি পরামর্শ রয়েছে। ১. রাজধানীর সচিবালয়, মন্ত্রী পাড়া, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, সরকারি কর্মকর্তাদের বাসভবন, সেনানিবাস একবিংশ শতাব্দীর ঢাকার কোথায় নির্মাণ করা উচিত হবে, তা নিয়ে নগর পরিকল্পনাবিদ, স্থপতি, নগর বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা না করে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না। ২. অ্যাডহক ভিত্তিতে এসব কাজ করা ঠিক নয়। যা করা হবে তা অন্তত ৫০-৭৫ বছরের ঢাকাকে (নির্মাণের পর) সামনে রেখে পরিকল্পনা করা উচিত। ৩. ঢাকার নতুন ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের মধ্যে সচিবালয়সহ বিভিন্ন বড় সরকারি ভবন চিহ্নিত করা যেতে পারে। ৪. কুয়ালালামপুরের পুত্রজায়ার মতো ঢাকা শহরের বাইরে (পূর্বাচল?) বিভিন্ন সরকারি ভবনের একটি পৃথক উপশহর নির্মাণের কথাও চিন্তা করা যায়। পুত্রজায়া আমাদের সামনে একটি বড় দৃষ্টান্ত।
এসব কাজ কখন শুরু হবে বা শেষ হবে, তা বড় কথা নয়। এ ধরনের কাজ আমাদের করতে হবে—এখন থেকে এই ভাবনা শুরু করা উচিত। কারণ, আমাদের জমির পরিমাণ সীমিত। কৃষিজমি আরও সীমিত। এসব কাজে অনেকগুলো ধাপ থাকে। কোনো একটি সরকার সব কাজ করার সুযোগ পায় না। বর্তমান সরকারের আমলে অন্তত এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া যায় কি না, তার চেষ্টা করা উচিত। আমরা গণতান্ত্রিক দেশ বলে দাবি করি। তাই এ ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সরকার, সংসদের বিরোধী দল, অন্যান্য বড় রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ, নাগরিক সমাজ, বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠীর প্রতিনিধি—সবার সঙ্গে মতবিনিময় করা যেতে পারে। এতে এই বড় মাপের সিদ্ধান্তে সবার মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হবে। তার মূল্য কম নয়। পরের টার্মে যদি বর্তমান ক্ষমতাসীন দলই নির্বাচিত হয়, তাহলে তারা আরও পাঁচ বছর কাজ এগিয়ে নিতে পারবে। এ ধরনের বড় প্রকল্প ১৫-২০ বছরের আগে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না।
আমরা আশা করব, সরকার এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু করবে। অন্তত নির্দিষ্ট এজেন্ডা দিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে প্রাথমিক ও খসড়া রূপরেখা তৈরির দায়িত্ব দেবে। প্রাথমিক কাজ হিসেবে সেটাও কম নয়। মনে রাখা দরকার, আমাদের জন্য এই ভাবনা আর কেউ ভাববেন না। আমাদেরই ভাবতে হবে।
মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর: মিডিয়া ও উন্নয়নকর্মী।
Source : daily ittefak
0 comments:
Post a Comment